ছবি : মেসেঞ্জার
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে রাস্তার দুই পাশ ভরাটের জন্য ফসলি জমির টপ সয়েলের মাটি কাটায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষকরা। এছাড়াও বাড়ির ভিতরে খাল খুঁড়েও মাট কেটে নিয়েছেন। বাধা দিলেও শোনেননি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা বলে অভিযোগ ওঠেছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে এ নিয়ে ভুক্তভোগী ওই কৃষকরা ক্ষতিপূরণ দাবী করে ইউএনও'র নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।
তবে বিশেষ কাজে ইউএনও সবুজ কুমার বসাক চিলমারী ইউনিয়নে অবস্থান করায় অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি। এদিকে, অফিসে লিখিত অভিযোগের প্রাপ্তি স্বীকার এ প্রতিনিধির কাছে রয়েছে।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) চিলমারীর তত্ত্বাবধানে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে 'গ্রামীণ সড়ক' মেরামত ও সংরক্ষণের আওতায় সড়ক পূর্ণবাসন করণ কাজ বাস্তবায়নে উপজেলা থানাহাট জিসি হতে রাজারভিটা সড়কের কাজ শুরু হয়েছে। এতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার ১৩৪ টাকা। কাজ করছেন উলিপুরের নিবেদিতা ট্রেডার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার পাশের জমি হতে টপ সয়েলের মাটি কেটে নিচ্ছেন। অনেক জমিতে আবার খাল খুঁড়ে মাটি তুলেছেন। এতে ফসলি জমির উর্বরতা কমে যাওয়ার শঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। এদিকে মাটি তুলতে নিষেধ করলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন উচ্চবাচ্য কথা বলেন বলেও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়। এক বিধবা মহিলার বাড়ির ভিতর হতে খাল খুঁড়ে মাটি তুলেছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই এলাকার সেকেন্দার, চেনভানু, আমজাদ হোসেন, হারুন, মজি, শাহীন, লিয়াকত আলী ও কামরুলসহ আরও বেশকিছু কৃষকের জমির টপ সয়েলের মাটি কেটে নিয়ে রাস্তার কাজ করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ভুক্তভোগী ওই সব কৃষকরা জানান, রাস্তার দুই পাশে মাটি ভরাট করার জন্য জমি থেকে জোরপূর্বক টপ সয়েলের মাটি কেটে নেয়। এতে বাধা দিলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করেন।
ভুক্তভোগীরা আরও জানান, বাড়ির ভিতরে খাল খুঁড়ে মাটি কেটে রাস্তা ভরাট করেছেন। এতে বাধা প্রদান করলেও শোনেননি কেউ। এখন এসব কৃষকরা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, টপ সয়েল হলো জমির উৎকৃষ্ট প্রাণ। জমির উপরের ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত মাটিকে সাধারণত উর্বর অংশ (টপ সয়েল) বলা হয়। মূলত ওই অংশেই থাকে মূল জৈবশক্তি।
চিলমারী উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মো. নূর আলম জানান, মুলত টপ সয়েলের মাটি কেটে নিলে জমির উর্বরতা অনেকটাই কমে যায়। যেটি আগামী দুই তিন বছরেও পূর্বের অবস্থানে ফিরে পেতে সমস্যা হয়ে থাকে। অনেক কাটঘর পুরাতে হবে কৃষকদের।
চিলমারী উপজেলা প্রকৌশলী ফিরোজুর রহমান জানান, রাস্তায় আলাদা করে মাটি ভরাটের জন্য বাজেট থাকে না। রাস্তার পাশে যেসব জমি থাকে সেখান থেকে সমান ভাবে কিছু মাটি নিয়ে কাজ করতে হয়।
মেসেঞ্জার/রাফি/তুষার