ছবি : মেসেঞ্জার
গত ১৫ ডিসেম্বর বরগুনার চান্দখালী বাজারে একটি ব্রিজ ভেঙে পড়ায় দুর্ভোগে পড়েছে হাজারো মানুষ। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বরগুনা উপজেলার তিনটি গ্রাম ও বেতাগী উপজেলার চান্দখালী বাজার। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল করছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ চান্দখালী বাজারে আসা হাজারো মানুষ। যে কোনো সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্ত ভেঙে খালে পড়ে আছে। ব্রিজের মরিচা পড়া জয়েস্ট, এঙ্গেলগুলো ব্রিজ থেকে খসে গিয়ে ঝুলে আছে। ব্রিজটির মাঝের অংশটি জড়াজীর্ণ পিলার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শূণ্যের উপর ঝুলছে। স্থানীয় লোকজন নিজস্ব উদ্যোগে সুপারী গাছ কেটে তার উপরে তক্তা দিয়ে মই তৈরি করে চলাচলের ব্যবস্থা করায় তার উপর দিয়েই চলাচল করছে স্কুল কলেজের শত শত শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ। এতে যে কোনো সময় বড় ধরনের একটা দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
চান্দখালী ইসহাকিয়া মাধ্যমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: ফজলুল হক বলেন, ব্রিজটি বরগুনা, বেতাগী ও পটুয়াখালীর মৃজাগঞ্জ উপজেলাকে একই বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। চান্দখালী বাজারে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শত শত শিক্ষর্থীরা আসে এই ব্রিজটি পার হয়ে। অনতিবিলম্বে ব্রিজটি ভেঙে ফেলে বিকল্প ব্যবস্থা করা দরকার।
ব্রিজটি ভেঙে পড়ার বর্ণনা দিতে গিয়ে শিক্ষক নকিব নিজাম বলেন, ব্রিজটি ভেঙে পড়ার মুহূর্তে একটি অটো রিকশা কোনো রকমে পার হয়ে গেলেও যেতে পারেনি একটি শিশু। শিশুটি ভাঙা ব্রিজের একটা অংশ ধরে ঝুলে থেকে কোনো রকমে প্রাণে বেঁচে যায়।
চান্দখালী বাজারটি বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ প্রান্তে হওয়ায় বরগুনা উপজেলার ৪নং কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর প্রান্তের আঙ্গারপাড়া, হরিদ্রাবাড়িয়া ও আদাবাড়িয়া এই তিনটি গ্রামের শত শত মানুষ প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে চান্দখালী বাজারে চলে আসেন। ব্যবসায়ী বাদল রায় বলেন, সবথেকে বেশি ক্রেতা আসতো ব্রিজের দক্ষিণ পাড় থেকে। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছি আমরা চান্দখালী বাজারের ব্যবসায়ীরা। লোকজনের উপস্থিতি কম হওয়ায় বেচাকেনাও কমে গেছে। রিকশা চালক মামুন বলেন, এখান থেকে যাত্রী নিয়ে দুরদুরান্তে যেতাম। শুধু ব্রিজটার কারণে আমাদের আয় ইনকাম বন্ধ হয়ে গেছে। ছেলেপুলে নিয়ে না খেয়ে থাকার অবস্থা হয়েছে। পোশাকের দোকানদার বাদল বলেন, ব্রিজটি ভাঙার কারণে আমাদের বেচাকেনা কমে গেছে। দ্রুত মানুষ পারাপারের নিরাপদ ব্যবস্থা না করলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে।
বরগুনা জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, চান্দখালী বাজারের ব্রিজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ। প্রতিদিন হাজারো লোক চলাচল করে থাকে। নতুন ব্রিজ করতে গেলে বরাদ্দ, স্টিমেটের বিষয় আছে। এগুলো সময় সাপেক্ষ। তবে মানুষ চলাচলের জন্য বিকল্প ব্যবস্থার জন্য আমরা চেষ্টা করবো।
এলাকাবাসী বলছেন, দ্রুত ভাঙা ব্রিজটি অপসারণ না করলে আমতলী উপজেলার ব্রিজভাঙা ট্রাজেডির পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। তারা চলাচলের জন্য বিকল্প ব্যবস্থারও দাবি করেন।
মেসেঞ্জার/হিমাদ্রি/তুষার