ছবি : মেসেঞ্জার
‘এসো স্বপ্ন দেখাই, আলো ছড়াই, একসাথে’ স্লোগানে মহান বিজয় দিবসে ‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসব’ করেছে প্রত্যয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক একাডেমি। সোমবার পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দিনব্যাপী উৎসবে ছিল মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র প্রদর্শনী, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন সংগঠনের দলীয় পরিবেশনা, আলোচনা ও কথামালা, রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের গান, নৃত্য, আবৃত্তি, চিত্রনাট্য ও পুরষ্কার বিতরণ।
উৎসব উদ্বোধন করেন পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির উৎসব ও আনন্দের দিন। বাঙালি জাতির বীরত্বের অবিস্মরণীয় দিন। তাই বিজয়ের দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রত্যয়ের এই আয়োজন নতুন প্রজন্মকে পথ দেখাবে। সেই সাথে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশ গড়ার কাজে অংশগ্রহণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ ফারুক রবি। তিনি বলেন, ‘প্রত্যয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক একাডেমি গত ৯ বছর ধরে পটিয়ায় বড় পরিসরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসবের আয়োজন করে আসছে। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম যুদ্ধকালীন সময়ের সংগীত ও সংস্কৃতির চর্চার সাথে পরিচিত হবে। স্বাধীনতার ইতিহাস ও বাঙালির আত্মত্যাগ সম্পর্কে সচেতন হবে।’
বিকাল তিনটায় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান এস এম হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনাম। প্রধান বক্তা ছিলেন পটিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম।
এনামুল হক এনাম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আমাদের রক্ষা করতে হবে। তাই তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে হবে। বৈষম্যমুক্ত দেশ ও সমাজ নির্মাণ করতে হলে দেশকে ভালোবাসতে হবে।’
বিশেষ অতিথি ছিলেন পটিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব খোরশেদ আলম, পটিয়া পৌরসভা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী আবু তাহের, চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক ডা. এ কে এম নাসির উদ্দিন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর কর্মকর্তা লায়ন একেএম সালাউদ্দিন, পটিয়া প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি আবদুল হাকিম রানা, মুছা নূর চেমন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চেয়ারম্যান ডা. তাসলিম চৌধুরী, বিজয় উৎসবের কো-চেয়ারম্যান অধ্যাপক শান্তপদ বড়ুয়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয়ক রিদোয়ান ছিদ্দিকী, জাসাস দক্ষিণ জেলার সচিব নাসির উদ্দিন, নিপা এন্টারপ্রাইজ পরিচালক মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, ছালেহ আহম্মদ-হাসান বানু ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন হিরু, ক্রীড়া সংগঠক নুরুল হাসান সেলিম, মুস্তাফিজুর রহমান কালু ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান রিপন, রশিদাবাদ প্রবাসী কল্যাণ সমিতির পরিচালক আবুল কালাম রানা, ব্যবসায়ী ফিরোজুল আলম চৌধুরী পলাশ, আমজাদ হোসেন প্রমুখ।
সকাল ৯টা থেকে শুর হয় মুক্তিযুদ্ধের আলোকচিত্র প্রদর্শনী। বিভিন্ন গেম শোর পাশাপাশি উৎসবে সারাদিন চলে বিনামুল্যে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা। বেলা ২টা থেকে শুরু হয় ৩২০ প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে চিত্রাংকন প্রতিয়োগিতা। একাডেমির সদস্য নীহারিকা পাল ও শিবু মল্লিকের সঞ্চালনায় দুপুর আড়াইটা থেকে শুরু হয় বিভিন্ন সংগঠনের দলীয় পরিবেশনা।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন পটিয়ার ১১ সংগঠন। একে একে চলতে থাকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প, নাটক, মুক্তিযুদ্ধের গান, নৃত্য, আবৃত্তি, চিত্রনাট্য ও কথামালা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দলীয় পরিবেশনা নিয়ে অংশগ্রহণ করে গীতল সাংস্কৃতিক একাডেমি, ক্লাসিকেল এন্ড মডার্ন ডান্স একাডেমি, ছনহরা নান্দনিক শিল্পকলা একাডেমি, শিল্পচর্চা সাংস্কৃতিক একাডেমি, সংগীত নিকেতন, এসপিএন সাংস্কৃতিক একাডেমি, ছনহরা পঞ্চরুপা সংগীত বিদ্যাপীঠ, ত্রিনেত্র সাংস্কৃতিক একাডেমি, পটিয়া কেয়ার ফাউন্ডেশন ও প্রত্যয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক একাডেমির সদস্যরা। অনুষ্ঠানের ফাঁকে অতিথিরা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার বিতরণ করেন।
মেসেঞ্জার/তুষার