ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানের করাচি থেকে ৮২৫ কন্টেইনার পণ্য নিয়ে ফের চট্টগ্রাম বন্দরে আসছে পানামা পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’। গত ১৩ নভেম্বর প্রথমবারের মতো পোশাকশিল্পের কাঁচামাল কাপড়, রং, খেজুর, জিপসাম, পুরোনো লোহার টুকরা, মার্বেল ব্লক, কপার ওয়্যার, রেজিনসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে করাচি হয়ে চট্টগ্রামে নোঙর ফেলে জাহাজটি। এনিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা উঠে। তবে এবার আগেরবারের চেয়ে দ্বিগুণ পণ্য পরিবহণ করে করাচি ঘুরে জেবেদ আলী বন্দর থেকে রোববার (২২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম আসছে একই জাহাজ।
এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সচিব মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, রোববার বিকেল আনুমানিক ৫টা নাগাদ পানামা পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’ চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে নোঙ্গর করবে। এতে ৮২৫ বক্স পণ্য পরিবহণ করা হচ্ছে। এতে সোডিয়াম কার্বনেট বা সোডা অ্যাশ, মার্বেল ব্লক, পোশাকশিল্পের কাঁচামাল, চিনি, ইলেকট্রনিক পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য থাকবে।
মেরিটাইম অপটিমা সূত্রে জানা যায়, পানামা পতাকাবাহী ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’ নামের পণ্যবাহী জাহাজটি মালেশিয়ার পোর্ট ক্ল্যাং থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জেবেদ আলী সমুদ্রবন্দরে পৌঁছায় ৪ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা ৮ মিনিটে। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর ৬ ডিসেম্বর সকাল ৫টা ৪১ মিনিটে জাহাজটি জেবেদ আলী বন্দর থেকে রওনা হয়ে ৯ ডিসেম্বর করাচি বন্দরে পৌঁছায়। সেখান একদিন ৫ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট অবস্থান করে ১১ ডিসেম্বর রাতে জাহাজটি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা করে। ভারত সাগরের পশ্চিম উপকূলে জাহাজটি দেখা গেছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ স্বাধীনের পর থেকে করাচির সঙ্গে নৌ-বাণিজ্যে সরকারি কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও ৫৩ বছর ধরে কোনো জাহাজ আসেনি চট্টগ্রাম বন্দরে। দুবাইভিত্তিক কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা ‘ফিডার লাইনস ডিএমসিসি’ একটি কনটেইনার জাহাজ দিয়ে বাংলাদেশে কর্ণফুলী লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রিজেনসি লাইনস লিমিটেডকে বাংলাদেশে স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে যুক্ত করে নতুন এই সেবা চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে গত ১৩ নভেম্বর প্রথমবারের মতো করাচি হয়ে চট্টগ্রামে আসে একটি জাহাজ।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, প্রথমবার ৩৭০ একক কনটেইনার আনা হয় জাহাজটিতে করে। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে আনা হয় ২৯৭ একক কনটেইনার, বাকিগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। পাকিস্তানের ১৮টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ছয় হাজার ৩৩৭ টন পণ্য আনা হয় এ জাহাজে। পাকিস্তান থেকে সবচেয়ে বেশি আনা হয়েছে সোডিয়াম কার্বনেট বা সোডা অ্যাশ, যা টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় এটি। এতে মোট ১১৫ কনটেইনারে রয়েছে সোডা অ্যাশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আমদানি পণ্য হলো খনিজ পদার্থ ডলোমাইট। ডলোমাইট রয়েছে ৪৬ কনটেইনারে। মোট ৩৫ একক কনটেইনারে আনা হয়েছে চুনাপাথর। ম্যাগনেশিয়াম কার্বোনেট আনা হয়েছে ছয় কনটেইনারে। এছাড়া কাচশিল্পের কাঁচামাল ভাঙা কাচ আনা হয়েছে ১০ কনটেইনারে। শতভাগ রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পের কাঁচামাল কাপড়, রং ইত্যাদি রয়েছে ২৮ কনটেইনারে। একটি কনটেইনারে রয়েছে গাড়ির যন্ত্রাংশ।
মেসেঞ্জার/সাখাওয়াত/তুষার