ঢাকা,  সোমবার
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

ছাত্র আন্দোলনে চোখ হারানো সাইদুল পেল জীবিকার সহায়তা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:০২, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ছাত্র আন্দোলনে চোখ হারানো সাইদুল পেল জীবিকার সহায়তা

ছবি: মেসেঞ্জার

জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলির আঘাতে চোখের আলো হারিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন পটুয়াখালীর যুবক সাইদুল। দুর্ঘটনার পর জীবিকা হারিয়ে অন্ধকারাছন্ন হয়ে পরে তার জীবন। তবে সম্প্রতি কিছু হৃদয়বান মানুষের সহায়তায় আবারও জীবিকা নির্বাহের সুযোগ পেলেন সাইদুল যা তার জীবনে নতুন আশার আলো জ্বালিয়েছে।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের ডঃ আখতার উদ্দিন মিলনায়তনে জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গুলির স্প্লিন্টারে চোখের আলো হারিয়ে কর্মহীন হয়ে পরা পটুয়াখালীর দশমিনার যুবক সাইদুল (২৫)। সাইদুলের বিপর্যস্ত জীবন নিয়ে দি ডেইলি স্টার পটুয়াখালী প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করলে ঢাকার কয়েকজন হৃদয়বান পাঠকের নজরে পড়ে।

তিনি ওই সাংবাদিকের মাধ্যমে সাইদুলের সাথে যোগাযোগ করেন এবং সাইদুলের চাহিদা অনুযায়ী একটি ব্যাটারি চালিত রিক্সা উপহার দেন। পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দি ডেইলি স্টারের পটুয়াখালী প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন সাইদুলের হাতে রিক্সাটি তুলে দেন।

দুর্ঘটনার পূর্বে সাইদুল ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
রিক্সাটি গ্রহণ করে সাইদুল বলেন, "আমি কৃতজ্ঞ। আমার দুঃসময়ে যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তাদের প্রতি শুভকামনা। এখন আমি রিক্সাটির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবো। সমাজের হৃদয়বান এসব মানুষের জন্য আজও মানবতা টিকে আছে।"

সাইদুল বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ মৃধার ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাইদুল সবার বড়। অভাবের সংসারে বেশিদূর পড়াশোনা না করতে পারা সাইদুল ঢাকায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শরীরে অসংখ্য স্প্লিন্টারের অসহ্য ব্যথা আর চোখ হারিয়ে চিকিৎসাবিহীন দিন কাটছে বেকার যুবক সাইদুলের।

সাইদুল জানান, "আমার দুঃসময় দেখে স্ত্রী পান্না আক্তার আমাকে তালাক দিয়ে দেড় বছরের একমাত্র মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে চলে গেছেন।" তিনি আরও জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনে সামিল হন তিনি। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে আন্দোলনের সময় চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ওই সময় আন্দোলনে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও জনতা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সেখানে এক সপ্তাহ ভর্তি থাকার সময় তার চোখ থেকে স্প্লিন্টার বের করা হয়। পরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে আরও এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সেখানে তার চোখে অপারেশন করা হয়। স্প্লিন্টারের আঘাতে তার বাম চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।

 

মেসেঞ্জার/মানিক/জেআরটি