ঢাকা,  সোমবার
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

রাঙামাটিতে পাহাড়ি জুম পণ্য মেলা

রাঙামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

রাঙামাটিতে পাহাড়ি জুম পণ্য মেলা

সোমবার সকালে রাঙামাটির আশিকা কনভেনশন পার্কে অনুষ্ঠিত কৃষি পণ্য মেলা পরিদর্শন করেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট আওয়ালীন খালেক - টিডিএম।

পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি জনপদে পাহাড়ের জুমচাষীদের উৎপাদিত পণ্যের সাথে পরিচিতি করানো এবং জুমচাষীদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে রাঙামাটিতে বসেছে দিনব্যাপী কৃষি পণ্য মেলা। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে রাঙামাটির আশিকা কনভেনশন পার্কে এ মেলার আয়োজন করে এনজিও সংস্থা প্রগ্রেসিভ। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নারীদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগীদের কৃষি পণ্যের প্রচার ও প্রসার করানোর লক্ষ্যে দিনব্যাপী কৃষি পণ্য প্রদর্শনী মেলাটির আয়োজন করা হয়।

প্রদর্শনী কৃষি পণ্য মেলার ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট আওয়ালীন খালেক। পরে উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশনার মধ্যেদিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রগ্রেসিভ এর নির্বাহী পরিচালক সুচরিতা চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট আওয়ালীন খালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ পবন কুমার চাকমা, আইনজীবি সুস্মিতা চাকমা ও এনজিও সংস্থা আশিকার নির্বাহী পরিচালক বিপ্লব চাকমাসহ প্রমূখ। আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা মেলা পরিদর্শন করেন এবং পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদর্শনীতে রাঙামাটির জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি দুই উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন থেকে সুবিধাভোগীরা তাদের কৃষিপণ্যগুলো প্রদর্শনী করেন। দিনব্যাপী এ মেলায় রাঙামাটির বিভিন্ন দুর্গম এলাকা থেকে জুমিয়া নারীরা তাদের উৎপাদিত প্রায় দুইশত প্রকারের তিল, সবজি, আলু, তুলা, বিভিন্ন চাউলসহ নানান প্রকারের পণ্যর পসরা বসান। এ জুম পণ্য মেলা দেখতে ভীড় জমিয়েছেন বিভিন্ন বয়সীর লোকজন।

প্রগ্রেসিভ এর নির্বাহী পরিচালক সুচরিতা চাকমা বলেন, পাহাড়ের একমাত্র চাষাবাদ পদ্ধতি হল জুম চাষ। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও জুমের ফসল সংগ্রহ প্রায় শেষ পর্যায়েও। জুমে প্রধান ফসল ধান হলেও ধানের সাথী ফসল হিসেবে শত প্রকার সবজি, আলু, তৈল বীজ, তুলা ও মসলা জাতীয় ফসল উৎপাদন হয় জুমে। এগুলো যেমন সুস্বাদু তেমনি রয়েছে পুষ্টিগুণ। প্রাকৃতিক কাজে লাগিয়ে এ জুমের ফসল সম্পর্কে অজানা অনেকের কাছে। এসব জানাতে এবং জুম চাষকে টিকিয়ে রাখতে জুমের উৎপাদিত ফসলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে রাঙামাটি শহরের আশিকা কনভেনশন হলে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা প্রোগ্রেসিভ জুম পণ্য মেলা আয়োজন করেছে। এতে জুমিয়া নারীরা তাদের পরিশ্রমের ফলে উৎপাদিত তিল, নানান প্রকারের সবজি, তুলা, বিভিন্ন চাল, মসলা জাতীয় জুম পণ্য নিয়ে অংশ নিয়েছেন। এছাড়া মেলায় পাহাড়ী নারীদের তৈরীকৃত হস্তশিল্প বিভিন্ন গৃহস্থলী সামগ্রি মেলায় স্থান পেয়েছে।

সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট আওয়ালীন খালেক বলেন, ‘মেলায় যেসব জিনিসগুলো প্রদর্শন করা হয়েছে এগুলো সব জায়গায় পাওয়া যায় না। এ মেলার মাধ্যেমে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। এখানে অনেকগুলো ইউনিক জিনিসগুলো প্রদর্শনী করা হয়েছে যা কোথাও পাব না। এ মেলাগুলো যদি আরো বড় করে আয়োজন করা হয় তখন আরো অনেক গ্রাহক আসবে। বাইরে থেকে আসা পর্যটকরা এসব ইউনিক জিনিসগুলো আগ্রহ করে নিবে।’

মেসেঞ্জার/সুপ্রিয়/তুষার