ছবি : মেসেঞ্জার
লামার মিরিঞ্জা এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম খলিলুর রহমানের নামীয় জায়গা দখল করার চেষ্টা ও হামলা করে স্থাপনা নষ্ট করার প্রতিবাদে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মায়ের পক্ষে পাঠ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সন্তান জামাল উদ্দিন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম খলিলুর রহমানের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন লিখিত অভিযোগে বলেন, আমার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম খলিলুর রহমানের নামীয় ২৯৩ নং ছাগল খাইয়া মৌজায় ১০৬ নং আর হোল্ডিং এর ৪.৯০ একর জায়গা চিহ্নিত ভূমিদস্যু কর্তৃক জবর দখল চেষ্টা ও বার বার হামলা করে জায়গার স্থাপনা নষ্ট করছে।
আমার মরহুম স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। আমার স্বামী সরকারের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমি এই গর্বিত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হই। আমার ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে। আমার স্বামী ২০০৫ সালের (২৩ জুন) মৃত্যুবরণ করেছেন।
সেই থেকে আমি আমার ছেলে-মেয়েদেরকে নিয়ে দুঃখে কষ্টে দিন যাপন করে আসছি। আমার স্বামীর নামে ২৯৩ নং ছাগল খাইয়া মৌজায় (পূর্নবাসন) আর/১০৬ নং হোল্ডিং মূলে ৫.০০ (পাঁচ) একর ৩য় শ্রেণীর জমি তৌজিভুক্ত আছে। বন্দোবস্তি প্রাপ্তির পর থেকে আমরা এই জায়গা গুলো ভোগদখলে আছি। আপনারা জানেন, সারা বাংলাদেশে মিরিঞ্জা ভ্যালী একটি পরিচিত পর্যটন রিসোর্ট।
যাহা আমাদের এই জায়গায় আজ থেকে ৩/৪ বছর পূর্ব হতে পর্যটন খাতকে বিকাশ করার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে মিরিঞ্জা এলাকায় দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটছে। শত শত বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় আমরা কায়িক পরিশ্রম করে ও বহু অর্থ ব্যায়ে মিরিঞ্জা ভ্যালীর মাধ্যমে লামা উপজেলার পর্যটন খাতকে সম্ভাবনাময়ী শিল্প হিসেবে বিকাশ করার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
লামা উপজেলা পর্যটন খাতে দেশের মধ্যে সম্ভাবনাময়ী অর্থনৈতিক শিল্প। হিসেবে পরিণত হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের এ সম্ভাবনাকে ধ্বংস করার জন্য একটি বিশেষ মহল চরম ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মিরিঞ্জা ভ্যালী ধ্বংসের মাধ্যমে লামার পর্যটন খাতকে ধ্বংস করার জন্য একটি ভূমিদস্যু চক্র একের পর এক চক্রান্ত করে যাচ্ছে।
আমার স্বামীর নামীয় জায়গায় মিরিঞ্জা ভ্যালী প্রতিষ্ঠিত হয়ে পর্যটন পিপাসুদের হৃদয় আকর্ষন করতে সক্ষম হয়েছে আমরা চাই, লামায় পর্যটন শিল্পের বিকাশ হউক। আপনারা জেনে অবাক হবেন আমাদের এই মিরিঞ্জা ড্যালীতে এই পর্যন্ত একটি চিহ্নিত ভূমিদস্যু চক্র একাধিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
তারমধ্যে (২৪ নভেম্বর), (২৫ নভেম্বর), (৩ ডিসেম্বর) ও সর্বশেষ (২২ ডিসেম্বর) চিহ্নিত এই গ্রুপটি পেশি শক্তির বল দেখিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে মিরিঞ্জা ভ্যালীর স্থাপনা ধ্বংসের জন্য হামলা চালিয়েছে। আমরা প্রতিটি তারিখে হামলার বিষয়টি লামা থানায় লিখিত এবং মৌখিক ভাবে অবহিত করেছি এবং পুলিশের আইনগত সহায়তা চেয়ে আবেদন করেছি।
আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশ একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলেন এবং হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছি।
স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কাছে হামলাকারী এবং চিহ্নিত ভূমি দস্যুদের সনাক্ত করার পরেও এবং তাদের হামলার বিষয়টি সরেজমিনে প্রমাণিত হওয়ার পরেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত আইনগত কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বরং হামলাকারীরা উল্টো মিরিঞ্জা ভ্যালী সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে হয়রানী করেছে।
পুলিশ এই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে লামা থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করেছে। তারমধ্যে জিডি নং- ১০১০, তারিখ-২৬-১১-২০২৪ ইং ও অপর একটি। আজকে আমি মিডিয়ার সামনে এই সকল ষড়যন্ত্রকারী ও হামলাকারীদের নাম নিরুপায় হয়ে প্রকাশ করছি-১।
সাফায়েত হোসেন রাসেল, পিতা-ফসিউল মেম্বার, সাং- বাজার পাড়া, ৩নং ওয়ার্ড,লামা পৌরসভা, ২। আনোয়ার,পিতা-মৃত আলী মিয়া,সাং- চেয়ারম্যান পাড়া, ৪নং ওয়ার্ড, লামা পৌরসভা, ৩। মো. শরীফ, পিতা-আবুল কালাম, সাং- ইব্রাহিম লিডার পাড়া, ২নং ওয়ার্ড, ৬নং রূপসী পাড়া ইউনিয়ন, ৪।
মো. মামুন মিয়া, পিতা-আবুল কালাম, সাং- ইব্রাহীম লিডার পাড়া, ২নং ওয়ার্ড, ৬নং রূপসী পাড়া ইউ, পি, ৫। শওকত আলম, পিতা- জাহাঙ্গীর, সাং- লামামুখ, ৬নং ওয়ার্ড, লামা পৌরসভা, ৬। রবিউল ইসলাম খোকা, পিতা- নুরুল ইসলাম গাজী, সাং- মধুঝিরি, ৭নং ওয়ার্ড, লামা পৌরসভা, ৭।
রুবেল হাসান, পিতা-মৃত আবু তাহের, সাং- চেয়ারম্যান পাড়া, ৪নং ওয়ার্ড, লামা পৌরসভা, ৮। রবিউল আলম ইরান, পিতা- আমির হোসেন, সাং- চেয়ারম্যান পাড়া, ৪নং ওয়ার্ড, লামা পৌরসভা, ৯। ইউসুফ অলী, পিতা- মৃত বসু মোল্লা, ১০। মো. মিরাজ মিয়া, পিতা- আবেদ আলী, উভয়সাং- মিরিঞ্জা, ১নং ওয়ার্ড, ২নং লামা সদর ইউনিয়ন, সর্ব-লামা উপজেলা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা-সহ আরও অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জন।
জুলাই আগষ্টের বিপ্লবের পর উপরে বর্ণিত এই সকল ব্যক্তিরা সম্পূর্ণ বেআইনী ভাবে গায়ের জোর দেখিয়ে আইনকে তোয়াক্কা না করে এবং প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মিরিজিং ভ্যালীতে জবর দখল করতে উঠে পড়ে লেগেছে। বিপ্লবের পরবর্তী সময়কে উপরে বর্ণিত ব্যক্তিগণ ভূমি জবর দখলের মোক্ষম সময় হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাই আপনাদের মাধ্যমে তাদের এই ভূমিদস্যুতার চিত্র প্রশাসন ও জাতির সামনে প্রকাশ করার বিনীত অনুরোধ করছি।
মেসেঞ্জার/বিপ্লব/তারেক