ছবি: মেসেঞ্জার
বান্দরবানে লামা উপজেলায় সরই ইউনিয়নের তংঙঝিরি ত্রিপুরা পাড়ায় বড়দিনের আগের রাতে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী ১৭টি ঘরে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয়রা জানায়,গির্জা না থাকায় ওই পাড়ার বাসিন্দারা বড়দিন উপযাপন করতে পুরোনো পাড়ায় আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। মধ্যরাতের পর দুর্বৃত্তরা পাড়ায় ঢুকে আগুনে দিয়ে পালিয়ে যায়।
আরো জানান,তিন-চার বছর আগে একদল লোক এসে দাবি করে ছিলেন পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের স্ত্রীর নামে ওই পাড়ার জমি ইজারা দেওয়া হয়েছে। তারা পাড়ার বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে সেখানে একটি বাগান করেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ওই পাড়ার বাসিন্দারা আবার সেখানে এসে ঘর তৈরি করে বসবাস শুরু করেছেন।
তংঙঝিরি পাড়ার কারবারি পাইসাপ্রু ত্রিপুরা বলেন,এই পাড়াটি আমাদের বসবাসের অনেক পুরনো পাড়া আমদের তিন-চার প্রজন্মের পুরুষেরা এই পাড়াতেই ছিলাম। চার-পাঁচ বছর আগে একদল মানুষ নিজদের 'এসপির লোক'পরিচয় দিয়ে পাড়াটি উচ্ছেদ করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দখলদাররা পাড়ে ছেড়ে চলে যান। এরপর ১৯টি ত্রিপুরা পরিবার সেখানে এসে ঘর তৈরি করে বসবাস শুরু করে। এর নাম দেওয়া হয় তংঙঝিরি নতুন পাড়া। এখানে গির্জা না থাকার বড়দিন উপলক্ষ্যে নতুন পাড়ার বাসিন্দারা ঘরবাড়ি খালি রেখে গতকাল রাতে সবাই তংঙঝিরি পাড়ায় যায়। রাতে কেউ না থাকায় দুর্বৃত্তরা পাড়ায় আগুন দেয়। এতে দুটি বাদে পাড়ার সব গুলো ঘর পুড়ে যায়।
ভুক্তভোগী গুঙ্গামনি ত্রিপুরা বলেন, আমাদের ঘরগুলো সম্পূর্ণ ছাই হয়ে গেছে। আমরা সবাই এক পোশাকে আছি। আগুন থেকে কিছুই রক্ষা করতে পরিনি।
সরই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস কোম্পানি বলেন,গতরাতে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ১৭টি ঘর পুড়ে গেছে বলে শুনেছি। ইউএনও এবং আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছি।
লামা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুপায়ন দেব বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এসেছি ক্ষতিগ্রস্তদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। প্রাথমিকভাবে সতেরটি পরিবারের জন্য পরিবার প্রতি একটি কম্বল ও একবস্তা চাউল দিয়ে এসেছি। জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লামা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ওসি) মো. এনামুল হক ভুঁইয়া বলেন,সরই ইউনিয়নের এটা দুর্গম এলাকা তংঙঝিরি এলাকায় এই অগ্নিকান্ড ঘটনাটি ঘটে। গত ৫ আগস্টের পর জমি দখলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। দোষীদের আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
মেসেঞ্জার/বিপ্লব/তুষার