ছবি : মেসেঞ্জার
ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স এর ব্যাপারে যেন কোন হয়রানি না হয় সে বিষয়ে নজর দেবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র ডাক্তার শাহাদাত হোসেন।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের বৃহত্তর পাইকারি কাপড়ের মার্কেট টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির অভিষেক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম শহর ব্যবসায় বান্ধব শহর হোক সেটি আমার প্রত্যাশা। অতীতে চট্টগ্রামবাসীকে প্রচুর পরিমাণে হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে হয়েছে। বর্তমানে যে হোল্ডিং ট্যাক্সের বিষয় নিষ্পত্তি হয়েছে তো হয়েছে। আর যেসব হোল্ডিং ট্যাক্স এখনো নিষ্পত্তি হয়নি তা আপনারা যেভাবে দিতে চান আপনাদের সুবিধামতোই দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেব।
টেরিবাজারের মার্কেট ও আশপাশ সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার তাগিদ দিয়ে মেয়র বলেন, ক্লিন ও গ্রীন সিটি হিসেবে করতে চাই চট্টগ্রাম নগরকে। সে বিষয়ে সকল নাগরিকের সহযোগিতা চাই। চট্টগ্রাম শহরকে ক্লিন সিটি করতে টেরবাজারের আশপাশ সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানান।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে সাতকানীয়া-লোহাগাড়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, তিনটি বিষয়ে ব্যবসায়ীরা যেন সব সময় আমল করেন। প্রথমত দুর্নীতি মুক্ত থাকতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত ঘুষ প্রথা বন্ধ করতে হবে। ঘুষ দেওয়া-নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তৃতীয়ত দেশকে ভালোবাসতে হবে।
নবীদের জীবনীর বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যাংকের টাকা জনগনের। আর এসব টাকা ঋণ হিসেবে ব্যবসায়ীদের দিচ্ছে ব্যাংক। এই টাকা অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। কারণ এ টাকা ১৮ কোটি জনগণের টাকা। এ টাকা পরিশোধ না করলে ১৮ কোটি মানুষের কাছে ঋণী থাকতে হবে। আর এ হিসেব দিতে হবে কেয়ামতের ময়দানে।
বিশেষ অতিথিদের বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) শাকিলা সুলতানা বলেন, মার্কেটে যাওয়া নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে দোকান কর্মচারীদের প্রতি। এছাড়া টেরিবাজারে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে সহযোগিতার তাগিদ দিয়েছেন।
টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, ২০১৬ সালে সর্বশেষ সমিতির অভিষেক অনুষ্ঠান হয়েছে। বিগত আট বছর রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে তা করা সম্ভব হয়নি। টেরিবাজারের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সহযোগিতায় এবার অভিষেক অনুষ্ঠান সুন্দর ভাবে সম্পূর্ণ হচ্ছে। তবে সকল ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আমাদের এই কমিটি দু'বছরের চেয়ে একদিনও বেশি থাকবে না। এ সময়ের মধ্যে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের যেকোনো বিপদ আপদে পাশে থাকার প্রতিজ্ঞা করছি।
জানা গেছে, ১৯৯০ সালে টেরিবাজারের ব্যাবসায়ী ও কর্মচারীদের কল্যাণে গঠিত হয় এ ব্যবসায়ী সমিতি। তবে ২০০০ সাল থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবসায়ী সমিতির কমিটি ঘঠিত হয়।
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ২১টি পদে টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুল মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আবুল মনসুর।
অন্য ১৯টি পদের মধ্যে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে নাছির উদ্দিন চৌধুরী, সহ-সভাপতি পদে আলমগীর, ফরিদুল ইসলাম, মো. গোলাম নবী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন ও শেখ শহীদ সোহরার্দী বাহাদুর, সাংগঠনিক সম্পাদক ইশতেহাদ হোসেন রাজিব, অর্থ সম্পাদক মো. এমরানুল হক সাইয়েদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. বাকের উল্লাহ, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মো. হারুন উর রশিদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ ইব্রাহীম পারভেজ, দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ মামুনুর রশিদ, অডিটর সম্পাদক মো. দিদারুল আলম, সাহিত্য ও ধর্মীয় সম্পাদক মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিন, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. মামুনুর রশিদ, মো. জাবেদ ও আবু ছালেক নির্বাচিত হন।
মেসেঞ্জার/সাখাওয়াত/তুষার