ছবি : মেসেঞ্জার
খুলনা জেলা সদর থেকে দূরত্বের কথা মাথায় রেখে পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার জন্য ৪০ বছর আগে সোয়া দুই একর জমির ওপর একটি সাব-জেলখানা নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এই জেলখানা আজও কার্যকর হয়নি। ফলে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের খুলনা থেকে পাইকগাছা আদালতে হাজির করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে, যা জনদুর্ভোগ ও প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি করছে।
জেলখানার জন্য নির্মিত প্রাচীরবেষ্টিত ভবন ও সম্পত্তি দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে পড়ে আছে। সরকারের বিভিন্ন সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা আজও কার্যকর হয়নি। এমনকি রাজস্ব আয়ের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সরকারি খাতে কোনো অর্থ জমা পড়েনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খুলনা সদর থেকে পাইকগাছার দূরত্ব ৬৫ কিলোমিটার এবং কয়রার ১০০ কিলোমিটার। এই দুই উপজেলার বিচারিক কার্যক্রমের গুরুত্ব বিবেচনায় ১৯৮৪ সালের ২৯ মে পাইকগাছা সদরের বাতিখালী মৌজায় ২.২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে সাব-জেলখানা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে চারদিকে প্রাচীর নির্মাণ করেই কাজ থেমে যায়।
২০০৩ সালের ১০ মে এটি কিশোর অপরাধীদের জন্য সরকারি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং ২০০৫ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তর এটি ব্যবহারের দায়িত্ব পায়। কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি।
২০১৩ সালে শেখ রাসেল ট্রেনিং অ্যান্ড রিহেবিলিটেশন সেন্টার ফর দ্যা ডেস্টিটিউট চিলড্রেন প্রকল্পের আওতায় এটি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা আজও কার্যকর হয়নি। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে এ নিয়ে একাধিক চিঠি চালাচালি হলেও বাস্তবায়নে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এদিকে জেলখানার জন্য নির্মিত তিনটি কোয়ার্টার ও চারটি বড় কক্ষ বিনা ভাড়ায় স্থানীয় জজ কোর্ট এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মীরা ব্যবহার করছেন। এর ফলে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার সম্ভাব্য রাজস্ব আয়ও হারিয়ে যাচ্ছে।
সাবেক সমাজসেবা অফিসার সরদার আলী আহসান বলেন, ২০০৫ সাল থেকে আমার অফিস পাইকগাছার সাব জেলখানাটি দেখাশুনার দায়িত্ব পান। বর্তমান সমাজসেবা অফিসার অনাথ কুমার বিশ্বাস জানান, সমাজ সেবা অফিস থেকে তদারকি করা হচ্ছে। বর্তমানে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। সংস্কার অযোগ্য। আমরা শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এখনো কোন অনুমোদন পাইনি।
পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সবজেল হোসেন বলেন, আমি এখানে যোগদানের পরে শুনেছি, এখানে একটি জেলখানা আছে। এটি যদি চালু করা যায় তাহলে থানা ও কোর্ট পুলিশের আসামি আনা নেওয়ার ভোগান্তি কমবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন জানান, সারাদেশে উপজেলা পর্যায় মাত্র ১৮ টি কোর্ট রয়েছে সেক্ষেত্রে পাইকগাছা-কয়রা সৌভাগ্যবান। যেহেতু পাইকগাছায় সাব-জেলাখানা আছে এটি বর্তমানে সমাজসেবা অফিস দেখভাল করছে। তিনি আরো বলেন, এটা চালু করা এখন সময়ের দাবি।
মেসেঞ্জার/সবুজ/তুষার