ছবি : মেসেঞ্জার
খুলনার পাইকগাছার দিগন্তজোড়া মাঠে এখন শুধু হলুদ সরিষার ফুলের সমারোহ। সরিষার গাছে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। শীতের শিশির ভেজা সকালে সরিষার সোনালি ফুলগুলো রোদে ঝিকিমিকি করছে, যেন প্রকৃতি সেজেছে অপূর্ব এক সাজে।
পৌষের হিমেল বাতাসে সরিষার হলুদ ফুলগুলো দোল খাচ্ছে, আর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে সরিষার মিষ্টি গন্ধ। পাইকগাছা উপজেলার প্রতিটি মাঠ যেন হলুদ চাদরে মোড়ানো। এ দৃশ্য দেখে মনে হয়, প্রকৃতির নিজ হাতে বিছানো এক অপরূপ কারুকাজ।
উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের কৃষক রফিকুল ইসলাম গাজী জানান, সরিষা কম খরচে বেশি লাভজনক ফসল। অল্প সময়ে সরিষার ফলন ভালো হয় এবং এর চাষ পদ্ধতিও বেশ সহজ। গত বছর সরিষার দাম ভালো থাকায় এবার আরও বেশি জমিতে সরিষা চাষ করেছেন।
সরেজমিনে উপজেলার রবিউল গাজী, বারিক মোড়ল, ধীমান মল্লিক, সমীর কুমার, মিহির মন্ডল ও সবুর গাজীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক কৃষকেরা জানায়, দেশীয় সরিষার জাতগুলোর চেয়ে উন্নত জাতগুলো ফলন বেশি হয়। গত বছরের চেয়ে এ বছর সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। তারা আশা করছেন, এ বছর সরিষার বাজারও ভালো যাবে। এবার তারা গত বছরের তুলনায় বেশী জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো ফসল ঘরে তুলবেন বলে জানান তারা। তারা আরো জানান, সেচ ও সার কম লাগে। তাছাড়া সরিষার পাতা একটি উৎকৃষ্ট জৈব সার। প্রতি বিঘায় ৪-৫ মণ সরিষা হয়ে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উপজেলায় বাড়ছে সরিষা আবাদ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকরামুল হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে পাইকগাছায় ৩২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। সরকার বিনা মূল্যে সরিষার বীজ বিতরণ করায় চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা করেন।
সর্বোপরি, সরিষার এই হলুদ ফুল শুধু কৃষকের স্বপ্ন নয়, এটি প্রকৃতির এক অনন্য রূপবৈচিত্র্যও তুলে ধরে, যা শীতের সকালে এক অন্যরকম আনন্দের অনুভূতি এনে দেয়।
মেসেঞ্জার/সবুজ/তুষার