ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
০২ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

দেশের সকল সমস্যার সমাধানে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে হবে : তারেক রহমান

মাজহারুল মান্নান ও শেখ রিপন, নীলফামারী থেকে

প্রকাশিত: ২০:২৯, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

দেশের সকল সমস্যার সমাধানে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে হবে : তারেক রহমান

ছবি : মেসেঞ্জার

বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি জনগণ, রাজনৈতিক সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে হবে। মসজিদ কমিটি থেকে সংসদ পর্যন্ত নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দিয়ে পরিচালিত করতে হবে। তাহলে দেশের সকল সমস্যা পর্যায়ক্রমে সমাধান সম্ভব।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে নীলফামারীর দুরাছুরি দাখিল মাদরাসা মাঠে আমরা বিএনপি পরিবার আয়োজিত বিএনপি নেতা গোলাম রব্বানীর পরিবারের কাছে বাসস্থানের চাবি হস্তান্তর ও ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে চার জেলার শহীদ পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

আমরা বিএনপি পরিবারের আহবায়ক প্রখ্যাত সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক ও আমিনুল ইসলাম, রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু, জেলা আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকার, শহীদ গোলাম রব্বানীর বড় মেয়ে রওনক জানান রিক্তা প্রমুখ।

এসময় তারেক রহমান বলেন, গোলাম রব্বানীরা চেয়েছিল গ্রামেগঞ্জে দেশের মানুষের সমস্যাগুলো সমাধান করতে সরকার যেন বাধ্য থাকে। সেটাই তারা চেয়েছিল। এই গোলাম রব্বানীসহ শহীদ পরিবারগুলো চেয়েছিল সামগ্রিকভাবে এমন একটি দেশ গড়ে তোলা। যে দেশে কৃষক বীজ পাবে। সার পাবে। মানুষ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেবা পাবে। রাস্তাঘাটে নিরাপত্বা পাবে। গোলাম রব্বানীদের সেই কথা সেই দিনের সেই স্বৈরাচার শুনতে চায়নি। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও প্রেতাত্মারা আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এদের থেকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ‘এমন একটি দেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে মানুষ তার সামাজিক নিরাপত্বা পাবে। বিভিন্ন মতের পথের মানুষের সাথে পরামর্শ করে যে মতের সমর্থন বেশি তাদের পরামর্শে দেশ গড়ে তুলতে হবে। যেখানে মানুষের চাওয়াগুলো বাধাগ্রস্ত না হয়। এখানে আমরা গোলাম রব্বানীর পাশে দাঁড়াতে তার জন্য একটি আবাস বুনে দিচ্ছি। এ ধরণের হাজার গোলাম রব্বানী বাংলাদেশে রয়েছে। আমরা চাই, গোলাম রব্বানীর মতো ভাগ্য যেন আর কারোর না হয়।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা এমন একটি সরকার চাই। যে সরকার মানুষের কথা বলবে। যে সরকার মানুষের পাাশে থাকবে। জনগণের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার জন্য কাজ করবে। বর্তমানে যে দেশে আমি আছি। সেই দেশের সরকার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনতে হবে। মসজিদ কমিটি থেকে শুরু জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, সিটি করপোশেন সংসদ নির্বাচনসহ সকল প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত প্রতিনিধি দিয়ে পরিচালিত হবে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘গত ১৬ বছরের পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষেকে নির্যাতন করেছে। অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে। পালিয়ে যাওয়ার সময় ২ হাজার ছাত্র জনতাকে হত্যা করেছে। ৩০ হাজার মানুষকে আহত করেছে। গোলাম রব্বানী একজন সাধারণ নিরীহ মানুষ। শুধু মানুষের কথা বলার জন্য, অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য, ফ্যাসিবাদি হাসিনার নির্দেশে তাকে র‌্যাব দিয়ে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। শহীদদের ফিরিয়ে আনা না গেলেও গোলাম রব্বানীরা তাদের লক্ষ ছিল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা আছে। কারো কর্মসংস্থান দরকার। বিদ্যুতের সমস্যা। স্কুল কলেজ মাদরাসার শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা। কৃষকের সমস্যার সমাধান যদি করতে হয়। শিক্ষা সমস্যার সমাধান যদি করতে হয়। তাহলে সারাদেশের সমস্যাগুলো পর্যাক্রমে সমাধান করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন নির্বাচিত সরকার।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ ছাত্ররা যখন সংবিধান বাতিল করার কথা বলেন। তখন মনে প্রশ্ন জাগে কেন সেটা বলা হচ্ছে। তাহলে শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার কি হবে। তিনি যে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সেগুলোর কি হবে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং শেখ মুজিবরের বিতর্কিত সংশোধনীগুলো বাতিল করা যেতে পারে। কিন্তু পুরো সংবিধান বাতিল করা যাবে না। কারণ সংবধিান বাতিল করলে মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল স্পীড ধংস হয়ে যাবে।

আমরা বিএনপি পরিবারের আহবায়ক আতিকুর রহমান রুম্মন বলেন, রক্ত দিয়েছে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা। আপনারা কি সেই খুনি পুলিশ সদস্যদের বিচার করবেন। ফায়ার ফাইটার নয়নের পরিবার বলেছে অর্থ পাচার এবং অনিয়মের ফাইল যাতে পুড়ে যায়, সেজন্য সচিবালয়ে ফাইল নস্ট করার জন্য আগুন দেয়া হয়েছে। সেই আগুন নেভাতে গিয়ে নয়ন মারা গেছে। দোসরদের বিচার করতে হবে। প্রশাসনে যে সব দোসররা আছে তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

অনুষ্ঠানে নীলফামারীর সদর উপজেলার লক্ষিচাপ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ২০১৪ সালে র‌্যাবের ক্রস ফায়ারে হত্যাকান্ডের শিকার গোলাম রব্বানীর পরিবারের হাতে নতুন বাড়ির চাবি তুলে দেয়া হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ২৪ এর বিপ্লবে পঞ্চগড়, দিনাজপুর, নীলফামারী এবং ঠাকুরগাও জেলার শহীদ পরিবারগুলোর মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়।

মেসেঞ্জার/তুষার