ঢাকা,  শুক্রবার
০৩ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সেবা কার্যক্রমের তথ্য প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রবাসী ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সেবা কার্যক্রমের তথ্য প্রকাশ

জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে বিদেশ প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যে ’রেইজ প্রকল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক সমন্বয় সভা শেষে প্রবাসীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদা করা হয় - পিডিআই, চট্টগ্রাম।

"প্রত্যাগত অভিবাসী, ফিরে এলেও পাশে আছি" স্লোগানে বিদেশ ফেরত অভিবাসী কর্মীদের ফের একসঙ্গে করার সহযোগিতার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েলফেয়ার সেন্টার ‘রিকভারি এন্ড এ্যাডভান্সমেন্ট অব ইনফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট’ (রেইজ) প্রকল্প কাজ করছে। এ প্রকল্পে রেজিষ্ট্রেশন করলে ওরিয়েন্টেশন, কাউন্সেলিং, ঋণ প্রাপ্তিতে সহায়তা, আত্মকর্মসংস্থানে সহযোগিতা, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ গ্রহণে সহযোগিতা, আরপিএল (রিকগনিশন অব প্রায়র লার্নিং) সনদ প্রদান, কারিগরি প্রশিক্ষণসহ নানা সেবা পাওয়া যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সমন্বয় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও ওয়ালফেয়ার সেন্টার এর আয়োজনে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

ওয়েলফেয়ার সেন্টারে এসে একজন প্রবাসী তার ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স পাসপোর্ট অথবা বিমান টিকেট অথবা দূতাবাসের আউট পাস অথবা ফেরত আসা সংক্রান্ত অন্য কোন প্রমাণ, দুই কপি রঙিন ছবি এবং এনআইডি অথবা জন্মনিবন্ধন সনদ জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। এ সেবা কার্যক্রম মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ও সেবা কার্যক্রমকে আরো বেগবান করতে দেশে প্রায় ৩১টি ওয়েলফেয়ার সেন্টার কাজ করছে।

এছাড়াও বিদেশগামী ও প্রবাস ফেরত কর্মীদের সাময়িক আবাসন সুবিধাসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানের জন্য রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অদূরে নিরাপদ ও মনোরম পরিবেশে ওয়েজ আর্নার্স সেন্টার করা হয়েছে। যেখানে বিদেশগামী ও বিদেশ ফেরত প্রবাসী কর্মীরা ১০০ টাকা দিয়ে সরাসরি অনলাইনে আবেদন করে দিনে ২০০ টাকার বিনিময়ে সেখানে থাকার সুযোগ পাবে। প্রতিজন একটি সীটের জন্য আবেদন করতে পারবে।

চট্টগ্রাম ওয়েলফেয়ার সেন্টার গত এক বছরের প্রবাসে মৃত কর্মীর পরিবারের ৩২৭ জনকে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার আর্থিক অনুদান, বকেয়া বেতন, ইন্স্যুরেন্স ও সার্ভিস বেনিফিট আদায় পূর্বক ওয়ারিশদের ১১৪ জনকে ১২ কোটি ৪২ লাখ ২৫ হাজার ৮ শত ৯০ টাকা, আহত ও অসুস্থ কর্মীদের চিকিৎসার্থে ৩৭ জনকে ৪০ লাখ টাকা প্রদান করেছে। এছাড়া প্রবাসী কর্মীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষা সহায়তা ভাতা হিসেবে এসএসসি'তে ৪৩৯ জনকে ১ কোটি ২০ লাখ ৭২ হাজার ৫শত টাকা, এইচএসসি'তে ৩৫৬ জনকে ১ কোটি ২১ লাখ ৪ হাজার টাকা, প্রতিবন্ধী সন্তানদের প্রতিবন্ধী ভাতা হিসেবে ৭৩ জনকে ৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা প্রদান করেছে। এছাড়াও রেইজ প্রকল্পের মাধ্যমে নগদ প্রণোদনা হিসেবে ৭ হাজার ৪ শত ৯৩ জনকে ১০ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৫ শত টাকা প্রদান করেছে।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, চট্টগ্রাম একটি প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। তাছাড়া গ্রামীণ জনপদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড প্রবাসীদের ঘামে শ্রমে প্রেরিত অর্থের উপর নির্ভরশীল।

তিনি বলেন, বিদেশগামী ও বিদেশ ফেরতদের প্রশিক্ষণ প্রদানে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। প্রবাসীদের নিয়ে সরকারের চলমান সেবা ও পদক্ষেপগুলো প্রতিটি জেলা উপজেলায় এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রবাসীদের কাছে পৌঁছাতে হবে। ফেরত আসা কর্মীদের সঠিক কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন পেশা ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে নিয়োজিত করতে হবে। সেক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী এনজিও প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসতে হবে। প্রবাসীদের প্রয়োজনীয় পূঁজির যোগানে পাশে থাকতে হবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সহকারী কমিশনার শিফাত বিনতে আরা, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের আঞ্চলিক প্রধান হাসান মো. সাহরিয়ার, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মাহেন্দ্র চাকমা, ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ এনায়েত উল্লাহ ও বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিগণ। সঞ্চালনা করেন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের কর্মকর্তা রিফাত মাহমুদ।

আলোচনা সভা শেষে প্রবাসী পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থী ও প্রতিবন্ধী সন্তানদের হাতে চেক তুলে দেওয়া হয়।

মেসেঞ্জার/সাখাওয়াত/তুষার