ছবি : মেসেঞ্জার
ডাক্তারের সই জালিয়াতি করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ল্যাবের রিপোর্ট দেওয়াসহ অনুমোদনের সকল কাগজপত্র বৈধ না থাকায় রাঙামাটি পপুলার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হসপিটালকে ৫ হাজার টাকা জরিমানাসহ হসপিটালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের বিজন সরণী এলাকায় অবস্থিত রাঙামাটি পপুলার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হসপিটালে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করার সময়ে এ নির্দেশনা প্রদান করেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিব শংকর বসাক।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি পপুলার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হসপিটালে রোগীর রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সকল রিপোর্টে সই জালিয়াতির বিষয়ে সিভিল সার্জনের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আরিফুর রহমান। অভিযোগের ফরওয়ার্ড কপির ভিত্তিতে পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এসময় অভিযোগকারী ডাক্তারের সঙ্গে চুক্তিনামা ও হাসপাতাল অনুমোদনের সকল বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দিয়ে একই সঙ্গে ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রাঙামাটি পপুলার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হসপিটালের সাথে যোগাযোগ করা হলে হসপিটাল কর্তৃপক্ষের একজন তরুণ চাকমা বলেন, হসপিটালকে একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়নি। তিনদিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মাত্র। তবে ডাক্তারের সই জালিয়াতি হসপিটাল কর্তৃপক্ষ কখনও করেনি। ডাক্তার আরিফুর রহমান এর সঙ্গে প্রথমে আর্থিক যে চুক্তি হয় পরে তার থেকে দ্বিগুণ টাকা দাবি করায় তাকে বাদ দেওয়া হয়। তাকে বাদ দেওয়ার কারণে তিনি এ ষড়যন্ত্র করেন।
অভিযোগকারী ডাক্তার আরিফুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সাথে যদি চুক্তিবদ্ধ হতাম তাহলে তাদের কাছে চুক্তিপত্র থাকবে। রাঙামাটি শহরে যে রাঙামাটি পপুলার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হসপিটাল আছে তা আমি জানতামই না। কখনও নাম পর্যন্ত শুনিনি। সে অনুযায়ী তাদের সাথে কিভাবে চুক্তিবদ্ধ হব। তবে আমার সই জালিয়াতি করে যে রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে সেই বিষয়টি সিভিল সার্জনকে অবগত করেছিলাম। তাদের কোনো ক্ষতি করতে চায়নি। চেয়েছিলাম সকল প্রকার নিয়ম অনুযায়ী তাদের প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সেবা বজায় রাখতে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিব শংকর বসাক জানান, পপুলার ডায়াগনস্টিক এন্ড হসপিটালের লাইসেন্স সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সব বৈধ কাগজপত্র প্রস্তুত না করেই তারা ডায়াগনস্টিকটি সচল করেছে। সকল বৈধ কাগজপত্র না হওয়া পর্যন্ত হসপিটালটি বন্ধ থাকবে।
রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা বলেন, পপুলারের বিরুদ্ধে সই জালিয়াতির লিখিত অভিযোগ করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের এক সহকারী অধ্যাপক। পরে সেই লিখিত অভিযোগ প্রশাসনকে ফরওয়ার্ড করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। তবে প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদনপত্র ছিল না। নিয়ম অনুযায়ী অনুমোদনের সকল বৈধ কাগজপত্র ঠিক করে প্রতিষ্ঠানটি সেবার কার্যক্রম করা শুরু করার নিয়ম থাকলেও বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই সেবার কার্যক্রম শুরু করে পপুলার।
মেসেঞ্জার/শুভ/তুষার