ছবি : মেসেঞ্জার
ঐতিহাসিক নিদর্শন হয়ে এখনও রয়ে গেছে শ্রীমঙ্গলের ‘এয়ার স্ট্রিপ’। এই এয়ার স্ট্রিপটি হলো একটি সরল ও অপেক্ষাকৃত ছোট রানওয়ে বা অবতরণ পথ যেখানে বিমান ওঠা-নামা করতে পারে। এটি মাটির তৈরি ছোট রানওয়ে যেখানে ছোট ছোট বিমান ওঠা-নামা করতো। এই এয়ার স্ট্রিপটি ছোট বিমানবন্দর হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত ফিনলে চা কোম্পানির এয়ার স্ট্রিপটি ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি ফিনলে চা কোম্পানির ফুসকুড়ি চা বাগানে অবস্থিত। এয়ার স্ট্রিপটির চারদিকে চা বাগান বেষ্টিত দৃষ্টিনন্দন এক মনোরম পরিবেশে অবস্থিত। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে রাজঘাটের পথে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। নান্দনিক সৌন্দর্যময় এয়ার স্ট্রিপটির সামনে দিয়ে একটি পিচঢালা পথ প্রবাহমান। এয়ার স্ট্রিপটি মাটির তৈরি যার দৈর্ঘ্য ২ হাজার ফুট।
ফিনলে চা কোম্পানি সূত্র জানায়, ব্রিটিশ আমলে ফিনলে চা কোম্পানি সিলেট অঞ্চলে চা শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তৎকালীন সময়ে ব্রিটিশ মালিকানাধীন চা বাগানের কর্তাদের এখানে যাতায়াত ছিল দূরুহ। এয়ার স্ট্রিপটি মূলত: জেমস ফিনলের বড় বড় কর্তা-ব্যক্তি ও সাহেবরা ছোট বিমানে এখানে আসতেন এবং এই রানওয়েতে অবতরণ করতেন বলে জানা যায়। ব্রিটিশ শাসনামলে চা শিল্পের দ্রুত সম্প্রসারণের কারণে সিলেট অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন অপরিহার্য হয়ে ওঠে। এয়ার স্ট্রিপটি সেই সময়ে চা বাগানের মালিকদের জন্য দ্রুত যাতায়াতের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিল। এটি শ্রীমঙ্গলের চা শিল্পের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
এয়ার স্ট্রিপটি এখন জেমস ফিনলে চা কোম্পানি রক্ষণাবেক্ষণ করছে। এয়ার স্ট্রিপটির সামনে নামফলক থেকে দেখা যায় এটি ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি এখন সংরক্ষিত এলাকা।
বর্তমানে এয়ার স্ট্রিপটি ব্যবহৃত হয় না এবং এটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে রয়ে গেছে। শ্রীমঙ্গল ভ্রমণে আগ্রহী পর্যটকরা কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে এই স্থাপনাটি ঘুরে দেখতে পারেন এবং চা শিল্পের সমৃদ্ধ ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারেন।
মেসেঞ্জার/তুষার