ছবি : মেসেঞ্জার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাতক্ষীরা জেলা কমিটি নিয়ে বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। অনুমোদিত কমিটির তালিকা প্রকাশের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাখ্যানের পর এবার সদ্য ঘোষিত কমিটি থেকে আটজন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সাথে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সদ্য ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবি তোলা হয়েছে।
কমিটি থেকে পদত্যাগকারীরা হলেন, যুগ্ম-আহবায়ক মো. ইখতিয়ার উদ্দিন ও সায়েম রহমান সিয়াম, সদস্য এ.এইচ রিফাত, নাহিদ হোসেন, জালাল, মুশফিকুর রহমান, সাকিব হাসান ও মেহেদী হাসান।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) শহরের খুলনা রোড মোড়স্থ আসিফ চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
এসময় তারা অভিযোগ করে বলেন, ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবে যারা প্রথম সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের বাদ দিয়ে আন্দোলনে যাদের কোনো ভূমিকা ছিলনা তাদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বখতিয়ার হোসেন।
তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাতক্ষীরা জেলার সদ্য ঘোষিত কমিটি বাতিল করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা প্রথম সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদেরকে নিয়ে নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরার প্রধান সমন্বয়ক মো. ইমরান হোসেন বলেন, সাতক্ষীরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে তাতে যোগ্য ব্যক্তিদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। আমরা এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করছি।
তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আপনারা ঢাকায় বসে কমিটি করেছেন, আপনাদের উচিত ছিল সাতক্ষীরায় যারা নেতৃত্ব পর্যায়ে ছিল তারাসহ সবার সাথে সমন্বয় করে একটি বৈষম্যহীন কমিটি করা। আমরা চাইবো নতুন করে সবার সাথে আলোচনা করে সংযোজন বিয়োজন করে এই কমিটির সংস্কার করা হোক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক মুশফিকুর রহমান বলেন, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরার যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে এই কমিটিতে ত্যাগী এবং যোগ্য অনেককে রাখা হয়নি বরং বৈষম্যবিরোধী কমিটিতে বৈষম্য করা হয়েছে। সাতক্ষীরায় যারা এই আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিলো তাদেরকে রেখে এই কমিটি দেওয়া হয়েছে।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এএইচ রিফাত, সায়েম রহমান সিয়াম, মাসকুরা পারভীন মৌ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, ইখতিয়ার উদ্দিন, মোল্লা মোহাম্মদ সাহাজুদ্দিন, মোঃ তানজিদুর রহমান, সাকিব হাসান, রাকিব হাসান, মোমিনুর রহমান, তুহিন হোসেন রিয়াদ, মিজান রহমান, আনারুল ইসলাম সান, সামিউজ্জামান শ্রাবণ, মোস্তাফিজুর রহমান, ইব্রাহিম খলিল, মেহেদী হাসান, তারিক ইসলাম প্রমুখ।
এদিকে, কমিটি ঘোষণার পরপরই বিভক্ত হয়ে পড়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, গত ২ জানুয়ারি রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত পত্রে সাতক্ষীরা জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আরাফাত হোসাইনকে আহবায়ক ও সুহাইল মাহদীনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
মুখ্য সংগঠক আল শাহরিয়ার এবং মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মোহেনী পারভীনকে।
কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন, মুজাহিদুল ইসলাম, মো. মিজানুর রহমান, মাসুম বিল্লাহ, সোহেলী তামান্না, মইনুল ইসলাম দীপু, আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ আরও আটজন। যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মো. নাজমুল হোসেন, মো: রেজওয়ান আহমেদ, ওমর তাসনিম রাহাতসহ আরও সাতজন। সংগঠক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মো: হাসিবুল হাসান, আমিনুর রহমান রাতুল, শেখ ওমর ফারুকসহ মোট সাতজন। এছাড়াও ১২২ জন সদস্য হিসেবে কমিটিতে স্থান পেয়েছেন।
মেসেঞ্জার/আসাদুজ্জামান/তুষার