ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
০৯ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

হিমেল বাতাসে দিনাজপুরে জনজীবন বিপর্যস্ত, তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা

দিনাজপুর প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১৭:১১, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

হিমেল বাতাসে দিনাজপুরে জনজীবন বিপর্যস্ত, তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা

ছবি : সংগৃহীত

হিমালয়ের পাদদেশের জেলা হিসেবে পরিচিত দিনাজপুর। প্রতিনিয়ত উঠা-নামা করছে তাপমাত্রার পারদ। সাথে যোগ হয়েছে ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাস। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ জেলার বাসিন্দাদের জনজীবন। সবচেয়ে বেকায় পড়েছেন দিনমজুরেরা। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে রাস্তাঘাট।

শীতের এমন শীতলতায় খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্টের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। শীত নিবারণের জন্য পুরাতন মোটা কাপড়ের দোকানে ছুটছেন সাধারণ মানুষেরা। শহরের হকার্স মার্কেট, বউ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ফুটপাতের পুরাতন জামা কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন তারা। এদিকে গ্রামাঞ্চলে শীতের মাত্রা যেন প্রভাব ফেলেছে গৃহপালিত পশুর উপরেও। গরু কিংবা ছাগল শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষায় পরানো হচ্ছে চটের বস্তা বা পুরাতন জামা কাপড়।

এদিকে দিনে ও রাতে তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস।

দিনাজপুর শহরের নৈশ প্রহরী আব্দুল খালেক বলেন, “মার্কেটে পাহারা দিতে হয় সারারাত ধরে। যে বাতাস তাতে তো ঘরের মধ্যেই শীত লাগে। বাইরে থাকা টা অনেক কষ্ট। যে কাপড় আছে তাতে শীত মানে না। একটু পুরাতন জামা কাপড়ের দোকানে আসছি যদি কম দামে কাপড় পাই।”

ইজিবাইক চালক নজরুল ইসলাম বলেন, “রোদের দেখা নেই। তার উপর ঘনকুয়াশা পড়ছে। শীতে ঠান্ডায় ঠিকমত গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। তার উপর ঠান্ডার কারণে দুপুর পর্যন্ত রাস্তায় মানুষের ঠিকমত দেখা যায় না। ভাড়া পাওয়া না যাওয়ায় দিনশেষে দেখা যায় ইজিবাইকের জমার টাকাও উঠে না।”

উলিপুর গ্রামের কৃষক আকবর হোসেন বলেন, “ঠান্ডা ও কুয়াশার কারনে শরীর চলে না। ক্ষেতে আলু লাগাইছি। কুয়াশার কারনে আলুর অনেক রোগ হয়। কিন্তু ঠান্ডার কারনে ক্ষেত কীটনাশক ছিটাতে পারছি না। খুবই সমস্যা হচ্ছে।”

এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে মানুষরা গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভীড় করছেন। দিনাজপুর শহরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের হকার্স মার্কেটে গড়ে উঠেছে সবচেয়ে বড় গরম কাপড়ের দোকান। এই মার্কেটে দেড় শতাধিক দোকানে ছোট-বড়, নারী-পুরুষসহ গরম কাপড়ের ভীড় করছেন। এই মার্কেটে সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে বাচ্চাদের কাপড় কিনতে পারছেন সাধারণ মানুষ।

কাপড় কিনতে আসা শহরের পাটুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা আফরোজা বেগম বলেন, “এক মেয়ে ছোট। শীত বেড়েছে। তাই বাচ্চার জন্য কাপড় কিনতে আসছি। এই মার্কেটে কাপড়ের দাম কম তাই মানুষ ভীড় করে বেশি। বাচ্চার পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও জন্য কিছু কাপড় কিনলাম।”

কাপড় বিক্রেতা জুয়েল রানা বলেন, “কয়েকদিন আগ থেকে এই জেলার তাপমাত্রা উঠানামা করছে। এই কারণে মার্কেটে গরম কাপড় কিনতে ভীড় করছেন সাধারণ মানুষ। আমরা ঢাকা ও সৈয়দপুর থেকে পুরাতন গরম কাপড়ের গাইড পাইকারী দামে কিনে এনে এখানে সামান্য কিছু লাভে বিক্রি করে দেই।”

বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় দিনাজপুরের জেলার সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানান, বর্তমানে উত্তরের হিমেল বায়ুর সক্রিয় রয়েছে এবং এটি গড়ে ঘন্টায় ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার গতিতে এ অঞ্চলে প্রবাহিত হচ্ছে। দিনের তাপমাত্রা ৫ থেকে ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মেসেঞ্জার/কুরবান/তুষার