ছবি : মেসেঞ্জার
বাংলাদেশের বৌদ্ধদের প্রধান ধর্মীয় গুরু ভদন্ত শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের ১০৬তম জন্মোৎসব পালিত হয়েছে। জন্মোৎসবকে ঘিরে বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকালে রাঙামাটি রাজবন বিহারে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মযজ্ঞ।
মঙ্গলবার থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে রাজবন বিহারে আসতে থাকেন পুণ্যার্থীরা। মহাসাধক বনভান্তেকে ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ভোর ৪টার দিকে রাজবন বিহারে পূণ্যার্থীরা ভিড় জমান। পরে ভোর ৫টার দিকে ভিক্ষুসংঘের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের পর ভোর ৬টার দিকে আতশবাজির জলকানিতে বিহারের দেশনালয়ে বনভান্তের ১০৬তম জন্মদিনের কেক কাটেন রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান ভদন্ত শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। ভক্তদের শ্রদ্ধাঞ্জলির ফুলে ছেয়ে যায় বনভান্তের নিস্প্রাণদেহ। নানা রঙে তৈরি তোরণ ও বেলুনে সাজানো হয় গোটা রাজবন বিহার এলাকা।
এ উপলক্ষে সকালে বৌদ্ধ পতাকা উত্তোলনের পর বিহারের মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ধর্মসভা। পঞ্চশীল প্রার্থনা, বুদ্ধপূজা, ত্রিপিটক পূজা, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, বুদ্ধমূর্তি দান, প্রদীপ পূজাসহ ধর্মীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ধর্মীয় ধর্মসভায় বক্তব্য রাখেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমা, সাবেক উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান, রাজবন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান। পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন বিজয়গিরি চাকমা। পূণ্যার্থীদের পক্ষ থেকে ভিক্ষুসংঘের বরাবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি পাঠ করেন বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমীয় খীসা।
বনভান্তের বাণীর উদ্ধৃতি দিয়ে পূণ্যার্থীদের মধ্যে ধর্মদেশনা দেন, রাজবন বিহারের আবাসিক ভিক্ষুপ্রধান ভদন্ত শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের অধ্যাপক ভদন্ত শ্রীমৎ জিনবোধি মহাস্থবির, ভদন্ত শ্রীমৎ জ্ঞানপ্রিয় মহাস্থবিরসহ অন্যান্য প্রমূখ।
জীবদ্দশায় রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ ছিলেন ভদন্ত শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তে। তার জন্ম ১৯২০ সালের ৮ জানুয়ারি রাঙামাটি সদরের ১১৫ নম্বর মগবান মৌজার মোড়ঘোনা গ্রামের এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে। তিনি মহামতি গৌতম বুদ্ধের পথ অনুসরণ করে ১৯৪৯ সালে গৃহত্যাগ করেন। যার পথ ধরে নির্বাণ লাভের মধ্য দিয়ে দেহত্যাগ করেন ২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি।
মেসেঞ্জার/সুপ্রিয়/তুষার