ছবি : মেসেঞ্জার
একসময় উত্তরের মোঙ্গার কথা আসলেই সমানে আসতো নদ-নদী আর চরাঞ্চলের মানুষের কথা। চরাঞ্চলের কথা আসলেই নীলফামারী ও লালমনিরহাটের মানুষ ভেবে নেন তিস্তার চর। বর্ষায় যতদূর চোখ যেত ততদূরে থৈ-থৈ পানি আর শুষ্ক মৌসুম হলেই তো ধূ-ধূ বালুর মরুভূমি। তিস্তা নদীর চরে সময়ের বিবর্তনে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের হাতছানি দিয়েছে চাষাবাদ। ১২ ধরণের ফসল আর সবজি দিচ্ছে কোটি টাকার হাতছানি।
সরেজমিনে, নীলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা উপজেলার বিভিন্ন চরগ্রাম ঘুরে দেখা যায়, রূপালী বালুর চাদরে ঘিরে সবুজ সমারোহ এ যেন আরেক অপরূপ নিলাভূমি। যতদূর চোখ পড়ে ততদূরে বিস্তৃত চরাঞ্চল ভরে গেছে বাদাম, তিল, তিসি, ভুট্টা, গম, পেঁয়াজ, রসুন ও আলুর মতো নানা অর্থকারী ফসলের সমারোহে। কৃষকরা এখন ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সূত্রমতে, ২০২৪ সালে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হেক্টর, ভূট্টা ১৪২৯২ হেক্টর, আলু ১৮৫০ হেক্টর, সরিষা ১২৬২ হেক্টর ও পেয়াজ ৭৮ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ডিমলা উপজেলা কৃষি বিভাগ।
ডিমলা উপজেলার টাপুরচর এলাকা রমজান আলী নামের এক কৃষক বলেন, ২ একর জমিতে চিনা বাদাম চাষ করেছি। ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে, বাজার ভালো থাকলে দাম ভালো পাওয়া যাবে। এক সময়ে এই জমি গুলোতে চাষাবাদ হতো না। এখন সবধরনের চাষাবাদ হয় আগের মোঙ্গা আর নেই বললেই চলে।
একই গ্রামের সামাদ আলী বলেন, ৭ বিঘা জমিতে পেয়াজ চাষ করেছি। বিঘা প্রতি ২০-২৫ মণ পেয়াজ পাওয়া যাবে। তবে পেয়াজের বাজার ভালো নয়। ঢাকার পাইকাররা আসলে ভালো বাজার পাওয়া যেত লাভবান হতাম।
তবে আনোয়ার হোসেন নামের এক কৃষক বলেন, তিস্তার চরে আগের চেয়ে ভালো ফসল ফলে সরকারীভাবে বাজার জাতের উদ্যোগ থাকলে এখানকার মানুষ আরো উপকৃত হতো এবং বেশি লাভবান হতো। সেজন্য প্রয়োজন ভালো মানের চলাচলের রাস্তা। রাস্তার কারণে অনেক সময় কৃষকের ফসল ঠিক সময়ে বাজারে নিয়ে যেতে পারে না।
ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না জানান, চলিত বছরের গত বছরের চেয়ে ১৫৫০ হেক্টর বেশি জমিতে ভূট্টা আবাদ বেশি হয়েছে। পেঁয়াজ যে পরিমাণে চাষ করেছে তাঁতে লোকাল মোটামুটি জোগান দেবে। বিভিন্ন বাজারে বাজারজাত করার জন্য অনেক প্রতিষ্ঠানে সাথে আলোচনা চলছে। যাতে করে এলাকার বাহিরে সকল কৃষি পণ্য সরবরাহ করা যায়। কৃষি বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ ও সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
মেসেঞ্জার/তুষার