ছবি : মেসেঞ্জার
রংপুর মহানগরীর বাস টার্মিনালে অনৈতিক কর্মকান্ডের সময় ভিডিও ও ছবি তুলে চাঁদাদাবির ঘটনায় খদ্দেরের হাতে ভাড়াটিয়া গাজি বকুল হত্যার ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় চাঞ্ছল্যকর জবানবন্দি দিয়েছে। গাজি বকুল বাসা ভাড়া নিয়ে পতিতাবৃত্তির ব্যবসা করতো। আনা হতো ছাত্রীদেরও। বুধবার (৮ জানুয়ারী) রাত সাড়ে ৯টায় রংপুর রংপুর অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতের বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর মহানগরপুলিশ কমিশনার মজিদ আলী জানান, আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে তরিকুল ইসলাম স্বীকার করেছেন মহানগরীর বাস টার্মিনাল এলাকায় জিসান আহমেদ নামের এক ব্যক্তির বাড়ি ভাড়া নিয়ে তাতে বকুল নামে এক ব্যক্তি পতিতাবৃত্তির ব্যবসা করতো।
ঘটনার দিন ২০২৪ সালের (২৮ অক্টোবর) রাতে নীলফামারী থেকে তরিকুল ও সুজন নামের ২ জন খদ্দের হিসেবে ওই ভাড়া বাসার ফ্লাটে আসেন এবং তারা টাকার বিনিময়ে সেখানে থাকা দুই নারীর সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হন।
পুলিশ কমিশনার জানান, অনৈতিক কর্মকান্ডের সময় বকুল ও তার সহযোগিরা ওই নারীসহ তরিকুলের বিবস্ত্র ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। এরপর তরিকুলের কাছে চুক্তির টাকা ছাড়াও ৩ লাখ টাকা চাঁদা চায়। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে বকুল ধারণকৃত ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।
এক পর্যায়ে তারা টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করলে একটি কক্ষে আটকিয়ে রেখে টাকা জোড়ার করার সুযোগ দেয়। এরই মধ্যে রাত গভীর হলে বকুল গাজীর সহযোগিরা চলে যায়। সুযোগ বুঝে তরিকুল ও সুজন কৌশলে রুম থেকে বের হয়ে বকুলকে মুখ হাত পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
পুলিশ কমিশনার বলেন, হত্যাকান্ডটি ক্লুলেস ছিল। একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আমার তথ্য পাই ওই বাড়িতে অপরিচিত উঠতি বয়সি ও শিক্ষার্থী নারী এবং অপরিচিত লোকজনের আনাগোনার। এরপর আমরা একটি ফোন নম্বর পাই। ওই ফোন নম্বরের সূত্র ধরেই আমার এই হত্যাকান্ডটির রহস্য উদঘাটন করি।
এরপর প্রযুক্তি ব্যবহার করে তরিকুলকে বুধবার (৮ জানুয়ারী) সকালে গ্রেপ্তার করি। তাকে গ্রেপ্তারের পর বিষয়টি খোলাসা হয়। তার দেয়া তথ্যের আলোকে জড়িত থাকার অভিযোগে বাড়ির মুল মালিক জিসান আহমেদ ও জাবেদ নামের আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তরিকুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সে এবং সুজন কোরআনের হাফেজ। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মহানগর পুলিশ কমিশনার আরও জানান, তদন্তে উঠে এসেছে ওই বাসায় পেশাদার পতিতা ছাড়াও ছাত্রীদের দিয়েও অনৈতিক কাজ করা হতো। বাড়ির মূল মালিক এবং ভাড়াটিয়া খুন হওয়া বকুল দুইজনই সেখানে পতিতাবৃত্তির ব্যবসা করতো। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট চুক্তির বিনিময়ে খদ্দের সংগ্রহ ছাড়াও সুযোগ বুঝে খদ্দেরদের ভিডিও ছবি তুলে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিতো।
তিনি আরও জানান, নগরীর বিভিন্ন স্পটে এ ধরণের ঘটনার খবর আমাদের কাছে আছে। বিষয়গুলো আমরা গভীরভাবে খতিয়ে দেখছি।
মেসেঞ্জার/মান্নান/তারেক