ছবি : মেসেঞ্জার
যশোর কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট টিম কর্তৃক হয়রানির অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় ক্লাব মিলনায়তনে চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলতদিয়াড়ে অবস্থিত মেসার্স বঙ্গ পিভিসি পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজের সকল শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাবৃন্দদের পক্ষে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান হাফিজ লিখিত অভিযোগে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি ২৪ বছর যাবৎ সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি বিগত ৩ অর্থ বছরের (২০১৮-২০১৯, ২০২০-২০২১, ২০২১-২০২২) চুয়াডাঙ্গা জেলার উৎপাদন পর্যায়ে সর্বোচ্চ ভ্যাট পরিশোধকারী হিসেবে সম্মাননা পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হিসাবে স্বীকৃতিলাভ করেছে।
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির নিয়মিত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শতাধিক পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন যাবৎ কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট যশোরের প্রিভেনটিভ টিম আমাদেরকে হয়রানী করছে। তারা বিভিন্ন সময় মোটা অংকের ঘুষ দাবীসহ নানাভাবে হয়রানী করছে।
গত ২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি সোমবার বেলা সাড় ১১টায় যশোর কাস্টমস প্রিভেনটিভ টিম এ প্রতিষ্ঠানে এসে প্রতিষ্ঠানের অফিসসহ আনাচে কানাচে তল্লাশীর নামে ফিল্মি স্টাইলে ডাকাতের মত আচরণ শুরু করে এবং এক পর্যায়ে ওই টিমের সাথে আসা যশোর কাস্টমস কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার রাকিবুল হাসান প্রতিষ্ঠানের মালিকের নিকট মোটা অংকের টাকা ঘুষ দাবী করেন। যেটা আমাদের মালিকের পক্ষে পরিশোধ করা আদৌ সম্ভব ছিলো না। তখন আমাদের মালিকের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে এক পর্যায়ে অতিরিক্ত কমিশনার রাকিবুল হাসান আমাদের প্রতিষ্ঠানের মালিক সেলিম আহমেদকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে এবং তাঁকে জোরপূর্বক তাঁর চেম্বার থেকে বের করে দিয়ে তাঁর অফিসের মূল্যবান কাগজপত্র তছনছ কারে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিসাধন করে।
উক্ত প্রিভেনটিভ টিমের দলনেতা ছিলেন কমিশনারের প্রটোকল অফিসার ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন। ১২ জন অফিসারের প্রিভেনটিভ দলে অন্যান্য অফিসারগণ আমাদের অফিসের কর্মচারীদের সাথেও উগ্র ও অসদাচরণ করেন। যার ফলে প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষ প্রতিষ্ঠানটি স্থায়ীভাবে বন্ধের ঘোষাণা দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের ঘোষণা লিখিতভাবে কারণ উল্লেখপূর্বক কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ চুয়াডাঙ্গা বিভাগীয় কর্মকর্তা (সহকারী কমিশনার) গৌরব কুমারকে জানানো হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে কোন প্রকার সহযোগীতা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। প্রতিষ্ঠানের মালিক স্বায়ীভাবে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধসহ আমাদের সমস্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের মৌখিকভাবে জানিয়ে দেন যে, আগামী ১৫ জানুয়ারী পর্যন্ত ১৫ দিনের বেতন ভাতা পরিশোধ করে আমাদেরকে চাকুরী হতে অব্যাহিত দেবে।
এমন পরিস্থিতিতে আমাদের মত খেটে খাওয়া কর্মচারী ও শ্রমিকদের মানবেতর জীবন যাপন ছাড়া অন্য কোন উপায় রইল না। কেননা, এই কাজ ব্যতীত আমাদের অন্য কোন কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই।
কাস্টমস কর্মকর্তাদের অনৈতিক হয়রানী বন্ধ করে বঙ্গ পিভিসি পাইপ ইন্ডাস্ট্রিজ নামের চলমান প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ না করাসহ এই প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারীদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা চলমান রাখার জন্য প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিল্প উপদেষ্টার নিকট আমরা আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
সাংবাদিক সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গ পিভিসি ইন্ডাস্ট্রিজের শ্রমিক প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম ও টিপু সুলতানসহ প্রায় দেড় শতাধিক কর্মচারী।
মেসেঞ্জার/লিটন/তুষার