ছবি : মেসেঞ্জার
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, দেশ এখনো দোসরমুক্ত হয়নি। দেশের অনেক রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দোসরদের মদদ দিচ্ছে। আমরা সংস্কারের কথা বলছি কিন্তু যারা এমনটি করছে তাদের বিরুদ্ধে কেন কথা বলছি না। তাদের বিরুদ্ধে কথা না বলতে পারলে অভ্যুত্থানের কোনো সফলতা আসবে না। আজকে চাঁদাবাজি হচ্ছে, সিন্ডিকেট হচ্ছে, কারা করছে, তাদের কথা কেন আমরা বলতে পারছি না। প্রত্যেকটা বাজারে চাঁদাবাজির জন্য পণ্যের দাম বাড়ছে। এতে সরকারকে দোষারোপ করে কোনো লাভ নেই।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় ময়মনসিংহ নগরীর তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে শাপলা চত্বরে শহীদ সিরাজের স্মরণে প্রতিষ্ঠিত আস-সিরাজ সংগঠনের আয়োজনে ‘২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে ও ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ, জুলাই বিপ্লবোত্তর আকাঙ্ক্ষা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারে আস-সিরাজ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুফতি মুহিববুল্লাহর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লুৎফর রহমান, বাকৃবির ভিসি প্রফেসর ড. ফজলুল হক ভূইয়া, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মুজাহিদ, আশরাফ মাহাদী, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা লুৎফর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মুফতি মাহাবুল্লাহ, গণতান্ত্রিক সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়ক সাইদুর রহমান, ডা. মাওলানা আব্দুল বারী, অধ্যক্ষ কামরুল হাসান মিলন, আয়োজক সংগঠনের সভাপতি চৌধুরী নাসির আহাম্মদ প্রমুখ।
সারজিস আলম বলেন, আমাদের লড়াই বাংলাদেশের জন্য, মানুষের জন্য। আমরা যেন কোন দল-মত বা গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি না হয়ে যাই। দেশের মানুষ অসহায় হয়ে শেখ হাসিনার কাছে জিম্মি হয়েছিল। এতকিছুর পরে দেয়ালে যখন মানুষের পিঠ ঠেকে গেছে, তখন মানুষ মুক্তির আশায় জীবন দিতে কুণ্ঠাবোধ করেনি। কিন্তু আমাদের সম্ভাবনাকে পদে পদে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। যেখানেই যাই, যার সাথেই কথা বলি, সবাই চায় গণহত্যাকারীদের বিচার। কিন্তু আজকে এই বিচারিক প্রক্রিয়াকে সরাসরি কিংবা পরোক্ষভাবে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, একটা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন দেশ পেয়েছি। সেই বিপ্লবের চেতনা এই সরকার ধারণ করতে পারেনি। সরকারের উচিত ছিল ক্ষমতায় বসার পর দেশে একটা শুদ্ধি অভিযান করা। তা না করে হঠাৎ পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে দিয়েছেন। তা বাড়ানোর আগে সকল স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শের প্রয়োজন ছিল। যেখানে গরিবের কষ্ট হবে না, সে জায়গায় ভ্যাট বাড়ানো উচিত ছিল। কিন্তু ওষুধের ওপর কেন ভ্যাট বাড়ালেন, কারণ বিপ্লবের চেতনা ধারণ করতে পারেন নাই। এগুলো হল এ সরকারের দুর্বলতা।
এর আগে ১৫টি শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে অনুদানের অর্থ বিতরণ করেন অতিথিরা। পরে অতিথিদের বক্তব্য শেষে জাগরণী সংগীতের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় এই সেমিনার। এতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
মেসেঞ্জার/নজরুল/তুষার