ছবি: সংগৃহীত
রাজধানী ও কক্সবাজার থেকে তিনজন সাক্ষী সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় সাক্ষ্য দিতে আসেন চট্টগ্রাম আদালতে। তবে আসামি হাজির না থাকাই সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। এদিকে আসামি কেন হাজির ছিল না পুলিশের আইজিপি'র কাছে জানতে চেয়েছেন আদালত। এছাড়া পরবর্তী শুনানির সময়ে যেন আসামি উপস্থিত থাকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ মো. কবির উদ্দিন প্রামানিক শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু। তিনি বলেন, নগরের ডবলমুরিং থানায় দুদকের দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল আজ (রোববার)। ঢাকা ব্যাংক কক্সবাজার শাখার সাবেক ম্যানেজার সৈয়দ মফিজ উদ্দিন আহমদ জব্দ করা আলামতসহ সাক্ষ্য দিতে আসেন। অন্যদিকে ঢাকা ব্যাংকের কক্সবাজার শাখার সাবেক সিনিয়র অফিসার আব্দুল কাইয়ুম ও সাবেক ম্যানেজার অপারেশন বদিউল আলম সাক্ষ্য দিতে আদালতে উপস্থিত হন। তারা রাজধানী ও কক্সবাজার থেকে সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসেন। কিন্তু আসামি উপস্থিত না থাকায় কাছ থেকে স্বাক্ষ গ্রহণ করা হয়নি।
তিনি বলেন, রাজধানীতে কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির কোন মামলা না থাকলেও তাকে কাশিমপুর কারাগারে রাখা হয়েছে। এর ফলে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য থাকলেও আসামি না থাকায় সাক্ষ্য গ্রহণ করা যায়নি। তবে আসামি কেন হাজির ছিল না পুলিশের আইজিপি'র কাছে জানতে চেয়েছেন আদালত। এছাড়া পরবর্তী শুনানির সময়ে যেন আসামি উপস্থিত থাকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশও দেওয়া হয়। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি রোববার সকাল ১১ টায় আদালতে আসে। এতে জানানো হয়, চাহিদা পত্র দিয়েও পুলিশ দল না পাওয়ায় বন্দিকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানায় কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে দুদক। মামলায় ৭৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯৭ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ৫৬ লাখ ১১ হাজার ৫শ' টাকার তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়। ২০০৮ সালের ২৪ জুন আদালতে এ মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।
এদিকে দীর্ঘদিন স্থগিত থাকার পর ২০১৭ সালে মামলাটির কার্যক্রম আবার শুরু হয়। পরে এ মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে চট্টগ্রামে বিচারিক আদালতে আবেদন করেন বদি। ওই আবেদন নাকচ করে গত ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
এদিকে অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে রিভিশন করেন বদি। ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি সেটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেয় উচ্চ আদালত। এরপর আবার মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে বিচারিক আদালতে আবেদন করেন বদি। একই বছরের ১৮ এপ্রিল তা খারিজ করে দেয় আদালত। পরে এ বিষয়ে হাই কোর্টে আপিল আবেদন করলে ২০২২ সালের ২২ মে তা খারিজ করে দেন আদালত।
এ মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্য গেহণ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন দুদক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু।
মেসেঞ্জার/সাখাওয়াত/এসকে/ইএইচএম