ক্যাপশন : রবিবার (১২ জনুয়ারি) সকালে সারদা পুলিশ একাডেমিতে ১৬৭তম ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে শ্রেষ্ঠ টিআরসিদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয় -টিডিএম।
অবশেষে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে (বিপিএ) ১৬৭তম ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে পুলিশ একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি ছিলেন পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ ও অতিরিক্ত আইজিপি মাসুদুর রহমান ভূঞা।
অনুষ্ঠানে তিনি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ ও বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী টিআরসিদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। উল্লেখ্য, প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে ৩৩৪ জন টিআরসি অংশ নেন। এদের মধ্যে সাজ্জাদুল ইসলাম (পিএ/৫৪৪) বেস্ট টিআরসি হিসেবে নির্বাচিত হন। এছাড়া বিষয়ভিত্তিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের মধ্যে বেস্ট একাডেমিক হিসেবে সুমন আলী (পিএ/৫৪২), বেস্ট ইন ফিল্ড এক্টিভিটিজ এবং বেস্ট শ্যুটার হিসেবে পৌরব চন্দ্র রায় (পিএ/১৪৫) নির্বাচিত হন। অনুষ্ঠানে কোর্স ডিরেক্টর পুলিশ সুপার তানভীর সালেহীন ইমনসহ অন্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
গতবছর ২৪ জুন ৩৪৪ জন ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবলের ছয়মাস মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। গতবছরের ২০ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ শেষ এবং ১৯ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের তারিখ ছিল। কিন্তু ৯ ডিসেম্বর ‘অনিবার্য কারণ’ দেখিয়ে কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়। এরপর গত ৩ জানুয়ারি প্রশিক্ষণরত ৮ পুলিশ কনস্টেবলকে অব্যাহতি দিয়ে একাডেমি থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে প্রশিক্ষণরত অন্য পুলিশ কনস্টেবলেরাও আতঙ্কে ছিলেন। অবশেষে রবিবার প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠত হওয়ায় কনস্টেবলরা স্বস্তি পেয়েছেন।
এদিকে ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর একাডেমিতে ৮২৩ জন ক্যাডেট উপপরিদর্শকের (এসআই) এক বছর মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। গত বছরের ৪ নভেম্বর প্রশিক্ষণ শেষ এবং ২৬ নভেম্বর সমাপনী কুচকাওয়াজের তারিখ নির্ধারিত হলেও পরে স্থগিত করা হয়। এরপর চার দফায় মোট ৩২১ জন ক্যাডেট এসআইকে নাস্তা না খেয়ে বিশৃঙ্খলা এবং প্রশিক্ষণ চলাকালে হইচইয়ের অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই ব্যাচে এখন ৫০২ জন এসআই ‘বহাল’ রয়েছেন। তাদের প্রশিক্ষণ এখনও শেষ হয়নি। সমাপনী কুচকাওয়াজের নতুন তারিখও ঘোষণা করা হয়নি।
অন্যদিকে ২০২৩ সালের ২১ অক্টোবর ৪০তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ৭১ জন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারের (এএসপি) এক বছর মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। গত বছরের ১৯ অক্টোবর প্রশিক্ষণ শেষ এবং ২০ অক্টোবর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের তারিখ ছিল। কিন্তু আগের রাতে কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়। এরপর গত বছরের ২৪ নভেম্বর আবারও সমাপনী কুচকাওয়াজ তারিখ নির্ধারিত হলেও ১৮ নভেম্বর আবার স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এরপর গত ১৫ ডিসেম্বর ‘প্যারেডে দৌড় না দিয়ে এলোমেলোভাবে হাঁটা’র অভিযোগে ২৫ জন এএসপিকে কৈফিয়ত তলব করা হয়। এএসপিগণ নির্ধারিত সময়ে লিখিত জবাব দিয়েছেন। তাদের ব্যাপারে এখনও চ’ড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
একাডেমিতে মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে পুলিশ সদস্যরা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে সংযুক্ত হন এবং মাঠপর্যায়ে কাজের সুযোগ পান। এর এক বছর পর তাদের চাকরি স্থায়ী হয়। প্রশিক্ষণের মেয়াদ শেষে প্রশিক্ষণ চলার এমন নজির পুলিশ একাডেমিতে এবারই প্রথম। প্রশিক্ষণ চলাকালে একটি ব্যাচের ৩২১ জন এসআই এবং ৮ কনস্টেবলকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন। এরআগে ২০০২ সালে ১০ নারীসহ ৩৩ জন এএসপিকে প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। পরে আদালতের আদেশে ঐ ব্যাচের কর্মকর্তারা পুনর্বহাল হয়ে এখনো সফলতার সাথে চাকরি করছেন।
মেসেঞ্জার/আনিসুজ্জামান/তুষার