ছবি: মেসেঞ্জার
ভোলার চরফ্যাসনের প্রধান সড়ক দখল করে কোটি টাকার ব্যবসা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সড়কের দু'পাশ ব্যবসায়ীদের দখলে থাকায় প্রধান সড়কটি সংকুচিত হয়ে গেছে। ফলে সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। সড়কে ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যাম থাকায় জরুরি সেবা প্রদানকারি বাহন গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে সড়ক মুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
সরেজমিনে উপজেলা সদর ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা বছরের পর বছর তাদের ব্যবসায়িক পণ্য-দ্রব্য ফুটপাত ও সড়কে রেখে বিক্রি করছেন। কিছু ব্যবসায়ী সড়কের উপরে মালামাল ছড়িয়ে রেখেছেন। ব্যবসার ধরণ অনুযায়ী অনেক ব্যবসায়ী সড়কে স্টিল, লোহারা পণ্য প্রস্তুত এবং মেরামত করতে গ্যাস ও আর্ক ওয়েল্ডিং ব্যবহার করছেন। এছাড়াও মোটরসাইকেল ওয়াস, গাড়ির ইঞ্জিন মেরামত, গ্যাস সিলিন্ডার, স্টিল ফার্ণিচার তৈরি করতে দেখা গেছে সড়কের উপর।
বিশেষ করে চরফ্যাসন টি.বি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের প্রধান সড়ক থেকে বিআরডিবি চত্ত্বর পর্যন্ত প্রায় নয় শতাধিক ব্যবসায়ী সড়ক দখল করে দীর্ঘ বছর ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। এজন্য চরফ্যাসন উপজেলার পৌরশহরের দুই তৃতীয়াংশ সড়ক পথচারী চলাচলে অযোগ্য।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানান, আওয়ামীলীগ সরকারের সময়কালে চরফ্যাসন বাজার ব্যবাসায়ী সমিতির চিহ্নিত তিন নেতার নিয়ন্ত্রণে ছিলো পুরো বাজার। তারা হলেন- মনির উদ্দিন চাষি, মাইনুল ইসলাম মনির, সাইফুল ইসলাম সবুজ। এই তিন নেতার প্রত্যক্ষ মদদে অবৈধ ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন সহস্রাধিক ব্যবসায়ী। এসব ব্যবসায়ীর অনিয়মের বিরুদ্ধে বিগত কয়েক বছর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন। চরফ্যাসন শহরের অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ততকালীন ইউএনও রুহুল আমিন অভিযান পরিচালনা করতে গেলে ২০২১ সালের ১২ মে রাত আনুমানিক ৮টায় ইউএনওর উপর হামলা করেছেন আওয়ামিলীগের প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা। ওইসময় হামলাকারীরা তার ব্যবহৃত গাড়ি ভাংচুর করেন। ওই ঘটনার পর থেকে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের অভিযান পরিচালনা করতে পরেনি চরফ্যাসন উপজেলা প্রশাসন।
চরফ্যাসন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির তিন শিক্ষার্থী ফারজানা, তহমিনা ও সিঁথি দেবনাথ জানান, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসাযাওয়া জন্য ফুটপাত ও সড়কের পাশ ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু ফুটপাতসহ সড়কের দু'পাশে ব্যবসায়ীদের মালামাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রধান সড়কের মধ্যে দিয়ে হেটে যেতে হয়।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, 'ফুটপাত ও সড়ক দখল করা ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী। তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কারো সাহস নাই।' ফুটপাত মুক্ত করে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক।
চরফ্যাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি বলেন, 'আমরাতো চেষ্টা করছি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরাও চেষ্টা করে যাচ্ছে যেন পৌরশহর সুশৃঙ্খল থাকে। এসব অনিয়মের বিষয়ে আরো মনোযোগী হবো। আরো সুন্দর করে আমাদের প্লান সাজাবো। যাতে এ সমস্যাগুলো না হয়।'
মেসেঞ্জার/সাইফুল/জেআরটি
