ছবি : মেসেঞ্জার
ময়মনসিংহে আনন্দ মোহন সরকারি কলেজে সিট নবায়নকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মী দুই পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হয়েছে। রোববার (১২ জানুয়ারি) বিকেল ৫টা থেকে ক্যাম্পাসে হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়ে চলে সন্ধা সাতটা পর্যন্ত। এসময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতরা হলেন, মেহেদী হাসান শিমুল, আল আমিন, সবুজ, রিফাত, তানভীরসহ অজ্ঞাত প্রায় ১০ জন। এদিকে সেনাবাহিনী ও কলেজ প্রশাসনের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কলেজ তিন দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমান উল্লাহ এ ব্যাপারে বলেন, হলের সিট নবায়ন ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল দেখা দেয়া চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ও সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে কলেজ তিন দিনের বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল আটটার মধ্যে কলেজ ছাত্রাবাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কলেজে কোন ক্লাস না চললেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বে ঘোষিত পরীক্ষাসমূহ যথারীতি চলবে। এছাড়াও অফিস যথারীতি খোলা থাকবে। শিক্ষার্থীদের দিবদমান গ্রুপকেই শান্ত থাকার জন্য এবং কলেজের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে কলেজের সিদ্ধান্তসমূহ শিক্ষার্থীদের মেনে নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ।
শিক্ষার্থী আকরাম হোসাইন অপু বলেন, আমাদের আশপাশে যতগুলো কলেজ রয়েছে তাদের সিট চার্জ ৫ হাজার টাকা। কিন্তু আমাদের দিতে হচ্ছে ৭ হাজার টাকা। তা কমানোর জন্য আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। এবিষয় নিয়ে অধ্যক্ষ স্যারের সাথে রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে বসার কথা ছিল। কিন্তু আমরা যথাসময়ে গেলেও স্যার আমাদের সাথে না বসে ছাত্রদল ও সমন্বয়কদের সঙ্গে বসে। পরে স্যার বিষয়টি নিয়ে আমাদের সরি বললে ছাত্রদল ও সমন্বয়করা ক্ষেপে গিয়ে চড়াও হয়, আমাদেরকে ছাত্রলীগের ট্যাগ দিয়ে বহিরাগতদের নিয়ে হামলা করে। এতে আমাদের অন্তত ৫ জন আহত হয়।
আনন্দ মোহন কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী হাজ্জাতুল হাসান মুন বলেন, হোস্টেলে এখনো ছাত্রলীগের পদধারী নেতাকর্মী রয়েছে। তারা অন্যায়ভাবে অধ্যক্ষ স্যারকে সরি বলাতে বাধ্য করে। বিষয়টি প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। আমাদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থী ও সমন্বয়করা রয়েছে।
সমন্বয়ক আশিকুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরাও কাজ করছি। যা হচ্ছে নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির কারণেই হচ্ছে।
এ ঘটনার খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন সেনাবাহিনী, পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। আমাদের সাথে সেনাবাহিনীও রয়েছে।
এ বিষয়ে আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমান উল্লাহ বলেন, হলের সিট নবায়ন ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে গন্ডগোলের সূত্রপাত। বর্তমানে প্রশাসন ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপর রয়েছে।
মেসেঞ্জার/নজরুল/তুষার