ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৪ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

ঠাকুরগাঁওয়ে কাজে আসছেনা কোটি টাকার স্লুইস গেইট

আরিফ হাসান, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ১৬:২১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫

ঠাকুরগাঁওয়ে কাজে আসছেনা কোটি টাকার স্লুইস গেইট

ছবি : মেসেঞ্জার

চারপাশে ফসলের বিস্তৃত মাঠ৷ মাঠের মাঝে বয়ে গেছে নহনা খাল, দু'পাশে ফসলের সবুজের সমাহার৷ ধান, ভুট্টা, আলুসহ নানা ফসল আবাদ করে থাকেন কৃষকেরা৷ নহনা খালে ২ কোটি ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় নির্মাণ করা হয়েছিল স্লুইস গেইট৷ স্থানীয় কৃষকদের উপকারের জন্য নির্মাণ করা হলেও কাজে আসছেনা গেইটটি৷ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ গেইট এখন গলার কাঁটা৷ দীর্ঘদিন থেকে সচল না থাকায় পরিণত হয়েছে মাদকসেবিদের আড্ডা খানায়।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের জাউনিয়া গ্রামে স্লুইস গেইটটি নির্মাণ করেছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। খরা মৌসুমে আবাদি জমিতে সেচ সুবিধা পেতে নির্মাণ করা হয় গেইটটি। শুরুতে সেটি খোলা ও বন্ধের কাজ হলেও প্রায় এক পাঁচ বছর ধরে কৃষকের কাজে আসছে না গেইটটি। কোনো ধরনের সেচ সুবিধা পাচ্ছেন না কৃষকেরা৷ নিথর হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে গেইটটি আর অন্যদিকে প্রবাহিত হচ্ছে পানির স্রোত।

দীর্ঘদিন থেকে ব্যবহার না হওয়া গেইটটি থেকে চুরি হয়ে গেছে লোহা জাতীয় অধিকাংশ মালামাল৷ ফসলি মাঠের মাঝে হওয়ায় গেইটি ঘিরে নিয়মিত আসর জমে মাদকসেবিদের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে কৃষিসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকেরা৷ এতে করে আবাদে যোগ হচ্ছে বাড়তি খরচ, সাথে নষ্ট হচ্ছে সরকারি সম্পদ৷ কৃষকদের উপকারে গেইটটি সংস্কার ও মেরামতের দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় কৃষক সফিউল আলম বলেন, আমাদের উপকারের জন্য এটি নির্মাণ করা হয়েছে। শুরুতে আমরা উপকার ভোগ করেছি। সরকার কোটি টাকা খরচ করে খরা মৌসুমে সেচের জন্য করেছেন৷ অথচ এটি এখন কৃষকের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। এটি সংস্কার করা জরুরি, এতে আমরা উপকৃত হব৷

কলেজ শিক্ষার্থী আবু নাঈম বলেন, সন্ধ্যা নামলে এখানে বখাটে ছেলেদের আসর জমে। সব মাদকসেবিদের আড্ডাখানা হয়েছে এটি৷ গেইটির যে মালামালগুলো রয়েছে সেগুলোও তারা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এসব নিয়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত৷

ছোট সিংগিয়া পানি ব্যবস্থপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, আমাদের সমিতির ব্যবস্থাপনায় একটি গেইট ও আরেকটি ওয়ার করা হয়েছে। শুরুতে আমাদের কৃষকদের জন্য এটি উপকার হলেও এখন কোন কাজে আসছেনা৷ প্রায় দুই বছর ধরে আমরা এলজিইডি’র সাথে এটির সংস্কার নিয়ে কথা বলছি। এটি পুনরায় মেরামত করা হলে আমাদের কৃষকদের কাজে আসবে৷

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বালীয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম বলেন, স্লুইস গেইটটি এখন কৃষকদের জন্য সেচ সুবিধায় আসছে না। গত বছরে আমরা এটির স্টিমেট পাঠিয়েছি। এ অর্থ বছরেও প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে। বছরের মধ্যভাগে মেরামত হবে বলে আশা করছি৷

নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন বিশ্বাস বলেন, গেইটির বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা কৃষকদের সেচ সুবিধা পেতে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুন:সংস্কারের কাজ শুরু করব।

মেসেঞ্জার/তুষার