ঢাকা,  বুধবার
১৫ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

শিশু নির্যাতনের দায়ে মাদ্রাসার প্রিন্সিপালসহ দু’জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১৯:২৬, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

শিশু নির্যাতনের দায়ে মাদ্রাসার প্রিন্সিপালসহ দু’জনের যাবজ্জীবন

ছবি : সংগৃহীত

শিশু নির্যাতনের (বলাৎকার) দায়ে পৃথক মামলায় মাদ্রাসার প্রিন্সিপালসহ দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে চট্টগ্রামের একটি আদালত।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফেরদৌস আরা এ দুটি রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচলাইশ থানার মামলার আসামি জোবায়ের হোসেন (২৭) নোয়াখালী জেলার চরজব্বর থানার পূর্ব চরভাটা চর মজিদ এলাকার মবিনুল হকের ছেলে। তিনি তিনি চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার পূর্ব নাসিরাবাদ রহমান নগর এলাকায় বসবাস করতেন। অন্যদিকে পতেঙ্গা থানার মামলার আসামি মো. মাকসুদুর রহমান (২৮) কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার দেওঘর ইউপির হাজী বাড়ির মোহাম্মদ কেনু মিয়ার ছেলে। তিনি নগরের পতেঙ্গা থানার মুসলিমাবাদ এলাকার জমিয়াতুল মদিনা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের পিপি শফিউল মোরশেদ চৌধুরী। তিনি দ্যা ডেইলি মেসেঞ্জারকে বলেন, আসামিদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(১) ধারায় অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় দুই আসামিকে পৃথকভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

ট্রাইব্যুনাল বেঞ্চ সহকারি কফিল উদ্দিন বলন, রায় ঘোষণার সময় পাঁচলাইশ থানার মামলার আসামি জোবায়ের হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তাকে সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে পতেঙ্গা থানার মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাকসুদুর রহমান রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত না থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ান মূলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। একই মামলায় অন্য এক অভিযুক্তের উপস্থিতিতে খালাস দেওয়া হয়েছে তাকে।

পতেঙ্গা থানার মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর নগরের পতেঙ্গা থানার মুসলিমাবাদ এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে রাস্তায় রাখা একটি ভ্যান গাড়ির উপর বসে মোবাইলে গেম খেলছিল দু'ভাই। এসময় জমিয়াতুল মদিনা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাকসুদুর রহমান ওই পথ দিয়ে মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় দু'ভাইয়ের মধ্যে পাঁচ বছর বয়সী ছোটজনকে মাদ্রাসায় নিয়ে গিয়ে বলাৎকার করে। পরে ওই শিশু ঘরে ফিরে তার মাকে জানায়। পরদিন ২০ অক্টোবর এ ঘটনায় ওই শিশুর পিতা বাদী হয়ে নগরের পতেঙ্গা থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় ২০২১ সালের ২৭ জুন আদালতে চার্জশিট দেন মামলা তদন্ত কর্মকর্তা। ২০২২ সালের ২ মার্চ এ মামলায় চার্জ গঠন করে বিচারিক কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন আদালত। এ মামলায় ১০ জন সাক্ষীর মধ্যে ছয় জন সাক্ষ্য দেন।

পাঁচলাইশ থানার মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, নগরের পাঁচলাইশ থানার রহমান নগর আবাসিক এলাকার বি ব্লকের জান্নাত স্টোর নামে এক মুদি দোকানে কাজ করতেন জোবায়ের হোসেন। ১৩ বছর বয়সী ভিকটিমও একই দোকানে কর্মরত ছিলেন। তারা ওই দোকান মালিক জলিল উদ্দিনের বাড়িতে একটি রুমে থাকতেন। ২০১৯ সালের ৬ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে জোবায়ের হোসেন ভিকটিমকে বলাৎকার করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে দামপাড়া পুলিশ লাইনের আবাসিক গেটের সামনে থেকে খুলশী থানা পুলিশ তাকে আটক করে পাঁচলাইশ থানায় হস্তান্তর করে। ঘটনার পরদিন ৭ জুলাই ভিকটিমের মা বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট দেওয়ার পর ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন করে বিচারিক কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন আদালত। এ মামলায় সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

মেসেঞ্জার/সাখাওয়াত/তুষার