ছবি : মেসেঞ্জার
পঞ্চগড়ে আটোয়ারী-বোদা কিসমত রেলস্টেশনে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে রেললাইন অবরোধ করার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে ওই স্টেশনটিতে লালকাপড় রেললাইনের ওপর ঝুলিয়ে অবরোধ করেন স্থানীয়রা।
পরে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন স্থানীয়রা। দুই ঘণ্টার পর স্বাভাবিক হয় রেললাইনটি।
স্থানীয়রা জানান, বোদা ও উপজেলার একমাত্র রেলস্টেশন এই কিসমত রেলওয়ে স্টেশন। এই স্টেশনে দ্রুতযান এক্সপ্রেসটি দীর্ঘদিন ধরে বিরতি ছিল। রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে এ স্টেশন থেকে ট্রেনটি প্রত্যাহার করার কথা থাকায় এলাকাবাসী স্টেশনটিতে অবরোধ করেন।
তারা আরও জানান, এই স্টেশনটিতে ঢাকা ও রাজশাহী থেকে যাত্রী যাওয়া আসা করে। কিন্তু ১৯ জানুয়ারি থেকে যাত্রাবিরতি বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। যদি ট্রেনটি না থামে তাহলে এই স্টেশন থেকে কেউ ট্রেনে উঠতে পারবে না। তাই ট্রেন চালুর দাবিতে রেললাইন অবরোধ করা হয়েছে। অবরোধের খবর শুনে ইউএনও ও পুলিশ এসে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের দাবির কথা শোনেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা বলবেন এমন আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
স্টেশন মাস্টার বজলুর রহমান বলেন, এই স্টেশনে দ্রুতযান এক্সপ্রেসটি ট্রেনটির দুই মিনিট বিরতি ছিল। এটা সরকার প্রত্যাহার করায় স্থানীয় বাসিন্দারা সকালে যাত্রাবিরতির দাবিতে স্টেশন অবরোধ করেন। পরে ইউএনও, পুলিশ এসে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। প্রশাসনের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেন। ট্রেনটির টিকিট খুবই কম বিক্রি হচ্ছে এই স্টেশনে।
কিসমত রেলওয়ে স্টেশন সম্পর্কে জানা যায়, আটোয়ারী ও বোদা এই দুই উপজেলার একমাত্র রেলওয়ে স্টেশন এটি। কিসমত রেলওয়ে স্টেশনটি পার্বতীপুর-পঞ্চগড় রেললাইনের পঞ্চগড়-রুহিয়া অংশ অবস্থিত। ১৯৬৭ সালে এ রেললাইনটি পাকিস্তান আমলে তৈরি করা হয়। ২০১৪ সালে সরকার ৯৮২ কোটি টাকা ব্যয় করে পার্বতীপুর থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত ডুয়েল গেজ লাইন ও কিছু স্টেশন নতুনভাবে নির্মাণ করে। এ সময় কিসমত রেলওয়ে স্টেশনে নতুন ভবন ও পুরুষ ও নারীদের জন্য পৃথক পৃথক বিশ্রামাগার নির্মাণ করা করা হয়।
স্টেশনটিতে দ্রুতযান এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস, দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস, উত্তরবঙ্গ মেইল, পঞ্চগড় কমিউটার, কাঞ্চন কমিউটার ও লোকাল ট্রেন চলাচল করছে। দুই উপজেলার একমাত্র রেলওয়ে স্টেশন হওয়ার কারণে দুই উপজেলার মানুষের কাছে জনপ্রিয়।
আটোয়ারি নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাফিউল মাজলুবিন রহমান বলেন, সকালে কিসমত রেলওয়ে স্টেশনে অবরোধের তথ্য জেনে সেখানে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের যে বক্তব্য, তা প্রতিবাদ লিপি আকারে আমাকে দিতে বলেছি। এটা পেলে ডিসি স্যারের কাছে দেব। ডিসি স্যার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আসলে তাদের দাবি ছিল এ রেলস্টেশনে যে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ ছিল, সেটা যেন পুনরায় চালু করা হয়। আর সার্বক্ষণিক যেন স্টেশনটি খোলা রাখা হয়। এমন দাবিতেই তারা অবরোধ করছিলেন।
মেসেঞ্জার/দোয়েল/তুষার