ছবি : মেসেঞ্জার
বগুড়ায় পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতকড়াসহ পালানো ছিনতাই মামলার আসামি শাহাদত হোসেন ওরফে কলমকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাত সোয়া ১০টার দিকে আদমদীঘি থানা–পুলিশ নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার মহাদেবপুর গ্রাম থেকে শাহাদতকে গ্রেপ্তার করে।
এর আগে বিক্ষুব্ধ জনতার পিটুনিতে আহত শাহাদত হোসেন নামের ছিনতাই মামলার এই আসামি বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়েছিলেন।
আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, হাতকড়াসহ হাসপাতাল থেকে পালানো শাহাদত হোসেন মহাদেবপুর গ্রামে শ্যালিকার বাড়িতে আত্মগোপন করে ছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাতকড়াও উদ্ধার হয়েছে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানায় কলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাঁকে আক্কেলপুর থানা–পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে জয়পুরহাটের তিলকপুর বাজারের এক ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ীর টাকাসহ ব্যাগ ছিনতাই করে মোটরসাইকেলে করে পালাচ্ছিলেন দুজন। এ সময় বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার আমইল গ্রামে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে শাহাদত হোসেন এবং তাঁর সহযোগী রাজু পালোয়ানকে আটক করে পিটুনি দেয় জনতা। এ ছাড়া আরেক সহযোগী বাঁধনকেও (২৬) জনতা আটক করে। একপর্যায়ে তিনজনকে পিটুনির পর রাজুর পায়ের রগ কর্তনেরও চেষ্টা করা হয়। পরে পুলিশ তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। আহত রাজু পালোয়ান, শাহাদত হোসেন ও বাঁধন আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ান গ্রাম চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে রাজু ও শাহাদতকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে এবং বাঁধনকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানায় বৃহস্পতিবার মামলা হয়।
এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে বগুড়া পুলিশ লাইনসের রিজার্ভ পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মফিজুল ও কনস্টেবল জাকিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া ও ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার । তিনি বলেন, এ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মোস্তফা মঞ্জুরকে প্রধান করে একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন বলেন, পুলিশ হেফাজতে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই ছিনতাইকারীর চিকিৎসা চলছিল। পুলিশ লাইনসের একজন এসআই এবং দুজন কনস্টেবল তাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। এর মধ্যে বেলা দেড়টার দিকে হাতকড়া পরা অবস্থায় শাহাদত নামের ছিনতাই মামলার ওই আসামি শৌচাগারে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে পালিয়েছিলেন।
মেসেঞ্জার/আলমগীর/তুষার