ঢাকা,  রোববার
১৯ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

টাঙ্গাইলে সম্প‌ত্তির লোভে প্রেম করে বিয়ের পর অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার অ‌ভিযোগ

টাঙ্গাইল প্রতি‌নি‌ধি

প্রকাশিত: ২১:১৪, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

টাঙ্গাইলে সম্প‌ত্তির লোভে প্রেম করে বিয়ের পর অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার অ‌ভিযোগ

ছবি : মেসেঞ্জার

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সম্প‌ত্তির লোভে কৌশলে প্রেম করে বিয়ের পর অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার অ‌ভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।

নিহত সৈয়দা হুমাইরা (১৯) উপ‌জেলার ফতেপুর ইউনিয়নের চামা‌রি এলাকার সৈয়দ আহমেদ হোসেন চৌধুরীর মেয়ে এবং একই এলাকার রা‌কিব হাসানের স্ত্রী। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও তার শশুরবা‌ড়ি‌র লোকজন পলাতক রয়েছে।

শ‌নিবার (১৮ জানুয়া‌রি) বিকেলে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতা‌ল মর্গে গৃহবধু হুমাইরার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার (১৭ জানুয়া‌রি) সকালে হুমাইরা মারা যাওয়ার পর তার স্বামী রা‌কিব হাসান স্ত্রীর মরদেহ মির্জাপুর হাসপাতালে ফেলে পা‌লিয়ে যায়।

প‌রিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে হুমাইরার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে একই গ্রামের বখাটে রা‌কিব হাসান। এক পর্যায়ে জি‌ম্মি করে হুমাইরাকে বিয়ে করে সে। হুমাইরার ভাইবোন না থাকায় তার বাবার সম্প‌ত্তি নিজের নামে লিখে দিতে নিয়‌মিত চাপ দিতো। মাঝেমধ্যে সম্প‌ত্তির জন্য পা‌রিবা‌রিক কলহ লেগেই থাকতো স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে। স্বামীর এমন অনৈতিক চাওয়া এবং মান‌সিক ও শা‌রিরীক নির্যাতনের কথা পরিবারকে জানাতো হুমাইরা। নিহত হুমাইরা অন্ত:সত্ত্বা হওয়ার পরও তাকে সম্প‌ত্তির জন্য চাপ দিতো। পরে শুক্রবার নির্যাতনের পর তাকে শ্বাসরো‌ধে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করেছে হুমাইরার বাবা আহমেদ হোসেন।

হুমাইরার খালাতো ভাই মঈন আফ্রিদী বলেন, রা‌কিব এলাকায় একজন নেশাখোর হিসেবে প‌রি‌চিত। কৌশলে হুমাইরার সাথে সম্পর্ক করে জি‌ম্মি করে বিয়ে করেছে। অন্ত:সত্ত্বা হওয়ার পরও তাকে হত্যা করে মরদেহ মির্জাপুর হাসপাতালে রেখে পা‌লিয়েছে। বারবার তাকে হাসপাতালে আসার কথা ব‌ললেও সে আসে‌নি। অপরাধ করেছে তাই পা‌লিয়েছে।

মেয়ের চাচা সৈয়দ আমির বলেন, যে রুমে মারা গেছে সেই রুম বাইরে থেকে আটকানো ছিল। ভাইয়ের জায়গা জ‌মি ভাল আছে। হুমাইরার ছাড়া ভাইয়ের কোন ছেলে সন্তান না থাকার সুযোগে সম্প‌ত্তি লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিত রাকিব। প্রেমের ফাদে ফেলে জি‌ম্মি করে বিয়ে করেছে ওই বখাটে ও‌ নেশাখোর। অন্ত:সত্ত্বা থাকার পরও ভা‌তিজিকে হত্যা করে মরদেহ ঝু‌লিয়ে দিয়েছে ঘরে।

হুমাইরার বাবা সৈয়দ আহমেদ হোসেন বলেন, সম্প‌ত্তির লোভে মেয়েকে কৌশলে বিয়ে করে‌ছে সে। ‌বিয়ের পরই সম্প‌ত্তির জন্য মারধর করতো। মেয়েটাকে শেষই করে দিল। এই ঘটনায় থানায় অ‌ভিযোগ‌ দিবো। মেয়ের হত্যার বিচার চাই।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ফরেন‌সিক বিভাগের সহকা‌রী অধ্যাপক র‌কিবুল হাসান খান বলেন, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। খুব দ্রুতই প্রতিবেদন দেয়া হবে। তবে গলায় ছাড়া শরীরের অন্যান্য স্থানে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়‌নি।

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও‌সি) মোশারফ হোসেন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প‌রিবারের পক্ষে কোন অ‌ভিযোগ না পাওয়ায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে। অ‌ভিযোগ পাওয়া গেলে ও ময়নাতদন্ত ‌রিপোর্ট আসার পর তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মেসেঞ্জার/মোস্তফা/তুষার