ঢাকা,  সোমবার
২০ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

বিশ্ব ইজতেমায় সাদপন্থী ও জুবায়ের পন্থীদের মধ্যে বিবাদমান দ্বন্দ্ব নিরসনের দাবিতে বরিশালে সংবাদ সম্মেলন

সাঈদ পান্থ, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৫:৪৬, ২০ জানুয়ারি ২০২৫

বিশ্ব ইজতেমায় সাদপন্থী ও জুবায়ের পন্থীদের মধ্যে বিবাদমান দ্বন্দ্ব নিরসনের দাবিতে বরিশালে সংবাদ সম্মেলন

ছবি : মেসেঞ্জার

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ও রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে তাবলীগ জামাতের বিবাদমান বৈষম্য নিরসনের দাবিতে বরিশালে সংবাদ সম্মেলন করেছে সচেতন ছাত্র সমাজ।

আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বৈষম্য নিরসনে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে কঠোর কর্মসূচীতে যাবেন বলে জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি বৈষম্য নিরসনে তিনটি প্রস্তাবনা দিয়েছেন তারা। সোমবার (২০ জানুয়ারি) বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বরিশাল সরকারি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।

তিনি বলেন, টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় তাবলীগ জামাতের বিবদমান পক্ষদ্বয়ের মধ্যে এক পক্ষ চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।

শুরাই নেজামের প্রধান মুরুব্বিরা ভারত ও পাকিস্তান থেকে নির্বিঘ্নে আসতে পারেন। অথচ বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারী মুরুব্বী বিশ্ব আমির মাওলানা সাদ সাহেব আসতে পারছেন না।

তাবলীগ জামাতের প্রদান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ ব্যবহারে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন সাদ পন্থীরা। এর আগে জোবায়ের পন্থীরা কাকরাইল মসজিদ ২৮ দিন ব্যবহার করতে। আর সাদপন্থীরা ১৪ দিন ব্যবহার করতে পারত কাকরাইল মসজিদ।

কিন্তু বর্তমানে জুবায়ের পন্থীরা জোরপূর্বক কাকরাইল মসজিদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। যা চরম বৈষম্য।

টঙ্গীর ময়দান বিশ্ব ইজতেমার কেন্দ্রস্থল বছরের অধিকাংশ সময় জোবায়ের পন্থীদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। অপরদিকে সাদপন্থীরা মাত্র কয়েকদিন ওই ময়দান ব্যবহার করতে পারেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, বিগত বছর গুলোতে শুরাই নেজাম প্রথম পর্বের ইজতেমা আয়োজন করে আসছেন। বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারীরা আনিচ্ছা সত্ত্বেও বারবার দ্বিতীয় পর্বে ইজতেমা করতে হচ্ছে।

সাদপন্থী তাবলীগের কর্মীরা বিভিন্ন মসজিদে আমল করতে গেলে প্রায়ই বাধার সম্মুখীন হয়। মসজিদগুলোতে তাদের অবস্থান, দাওয়াহ কার্যক্রম এবং আমল পরিচালনায় জোবায়ের পন্থীরা বাধা প্রদান করে। তাদের এ ধরনের আচরণ তাবলীগের মূল দর্শনের পরিপন্থী এবং দাওয়াহ কার্যক্রমে সংকট তৈরি করছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, জোবায়ের পন্থীরা টঙ্গীর ময়দানে পাঁচ দিনের জোড় সফলভাবে আয়োজন করেছেন। কিন্তু বিশ্ব মারকাজ নিজামুদ্দিনের অনুসারী মূলধারার তাবলীগের কর্মীরা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চলমান বিবাদমান নিরশনে তিনটি প্রস্তাবনা দিয়েছেন সচেতন ছাত্র সমাজের নেতৃবৃন্দ।

প্রস্তাবনা- ১: উভয় পক্ষই যেন তাদের সর্বোচ্চ মুরুব্বীদের নিয়ে যার যার কার্যক্রম (অর্থাৎ জোড়, ইজতেমা ও অন্যান্য আমল) পরিচালনা করতে পারে তা নিশ্চিত করা।

প্রস্তাবনা- ২: উভয় পক্ষের জন্যই কাকরাইল মসজিদ, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান এবং দেশের প্রতিটি মসজিদে তাবলীগের আমলে সমতা নিশ্চিত করা।

প্রস্তাবনা- 3: দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে উভয় পক্ষকে একে অপরের বিরুদ্ধে কোন ধরনের উস্কানীমূলক বক্তব্য এবং কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা এবং ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সমস্ত অনাকাঙ্ক্ষিত হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।

আগামি কয়েকদিনের মধ্যে বিবাদমান দ্বন্দ্ব নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে দেশের সচেতন ছাত্র সমাজ এবং সচেতন নাগরিকদেরকে নিয়ে আরো জোরালো কর্মসূচি পালন করার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বিএম কলেজ, হাতেম আলী কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

মেসেঞ্জার/তুষার