ছবি : মেসেঞ্জার
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার আমাদা আদর্শ কলেজে ষষ্ঠবার্ষিকী পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২০ জানুয়ারি) কলেজ চত্বরে দিনব্যাপী পিঠাউৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সকালে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন-অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান। এছাড়া বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন-নড়াইলের আমাদা গ্রামের সন্তান পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এস এম আবুল হাসান। স্বাগত ভাষণ দেন-কলেজ অধ্যক্ষ আল ফয়সাল খান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন-অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইটিসি) আহসান মাহমুদ রাসেল, লোহাগড়া উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি (মিঠুন) মৈত্র, লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হায়াতুজ্জামান হায়াতসহ অনেকে। অনুষ্ঠানে অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছাসহ সম্মাননা স্মারক দেয়া হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রভাষক রূপক মুখার্জি ও আশরাফুল ইসলাম।
এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন-অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক আসাদুজ্জামান মন্ডল, রবিউল ইসলাম খান, সুলতান মাহমুদ, বীর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ইমরান আহমেদসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।
এবারের পিঠাউৎসবের স্টলের মধ্যে রয়েছে-সোনালি সকাল পিঠাঘর, রসের হাঁড়ি, জামাই আদর পিঠাঘর, শ্বশুরবাড়ি মধুরহাড়ি পিঠাঘর, রসালো, পিঠাপুলি ও ননদ-ভাবী পিঠাঘর। এসব স্টলে কলেজ শিক্ষার্থীদের তৈরি দৃষ্টিনন্দন নকশা আর ভিন্ন স্বাদের হরেক রকম পিঠাপুলি দৃশ্যমান ছিল। হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পিঠাউৎসব জমজমাট হয়ে উঠে।
দৃষ্টিনন্দন নকশাখচিত পিঠাপুলির মধ্যে ছিল-চিতই পিঠা, কুলি পিঠা, ভাপা পিঠা, দুধকুলি, ধুপি পিঠা, হাত আনদোসা, রসপাকান, খড়েপাকান, ফুলপাকান, পদ্মপাকান, ঝুনঝুনিপাকান, ভাজা পিঠা, তকতি পিঠা, নকশা পিঠা, সিরিঞ্জ পিঠা, জজি পিঠা, আদিপাকান, আপেল পিঠা, নাড়– পিঠা, খেজুর পিঠা, দুধরুটি, লাভ পিঠা, ডিম পিঠা, নারকেলের চিড়া, দুধচিতই, পাতা পিঠা, ফুল পিঠা, ত্রিভুজ পিঠা, গোপাল পিঠা, তারা পিঠা, পাটিসাপ্টা, পুলি পিঠা, দুধপুলি, জিলাপি পিঠা, ধুনেপাতা চিতই, গোলাপ পিঠা, সেমাই পিঠাসহ অর্ধশতাধিক পিঠার সমাহার।
কলেজটি ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর ভালো পড়ালেখার পাশাপাশি বার্ষিক ক্রীড়া, পিঠাউৎসব, শিক্ষা সফরসহ বিভিন্ন জাতীয়, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় দিবস পালন করে আসছে।
আমাদা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আল ফয়সাল খান বলেন, আগের দিনে গ্রামগঞ্জে হরেক রকম পিঠা তৈরি হতো। যান্ত্রিকতার যাতাকলে অবাহমান বাঙলা থেকে পিঠার আয়োজন কিছুট হলেও কমে গেছে। বিশেষ করে এ প্রজন্মের কাছে পিঠার আদি ঐহিত্য ছড়িয়ে দিতে ষষ্ঠবারের মতো পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছি। আগামিতেও আমাদের এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে।
প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান বলেন, পিঠাপুলি বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবারের অন্যতম অনুসঙ্গ। এখানে হরেক রকম পিঠার আয়োজন মনোমুগ্ধকর।
অনুষ্ঠানের সভাপতি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডাক্তার এস এম আবুল হাসান বলেন, বাঙালির হাজারো বছরের ইতিহাস-ঐহিত্যের স্মারক পিঠাপুলির আয়োজন। আবহমান বাংলার এই ঐহিত্য সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে আজকের দিনটি একেবারে অন্যরকম। হাজারো মানুষের মিলনমেলার দিন এটি।
মেসেঞ্জার/তুষার