ছবি : মেসেঞ্জার
গত কয়েকদিন ধরে যশোরের ঝিকরগাছার বাঁকড়া অঞ্চলে বিদ্যুতের ব্যাপক লোডশেডিং শুরু হয়েছে। বাঁকড়া বিদ্যুৎ সাবস্টেশনের ব্রেকার নষ্ট হওয়ার কারণে এ লোডশেডিং হচ্ছে বলে অফিস থেকে জানানো হয়েছে।
এদিকে চলতি বছরের ইরি ধান চাষের মৌসুম শুরু হয়েছে। মাঠে বিদ্যুৎচালিত মোটর চলছে ব্যাপকভাবে। লোডশেডিং হওয়ার কারণে জমিতে পানি দিতে পারছে না কৃষক। ফলে দু:চিন্তায় আছে মোটরমালিক ও কৃষকেরা।
কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইরি চাষ কৃষকের সবচেয়ে বড় ধান উৎপাদনের মৌসুম। এই মৌসুম পরোটা বিদ্যুৎচালিত মোটর ও স্যালো ম্যাশিন দিয়ে পানি তুলে ইরি ধান চাষ করা হয়। ডিজেলচালিত স্যালো ম্যাশিন দিয়ে পানি সরবরাহ করলে অনেক বেশি খরচ হয়। এতে লোকসানের মুখে পড়ে কৃষক। ফলে অধিকাংশ কৃষক বিদ্যুৎচালিত মোটরপাম্পের উপরে বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এতে খরচ অনেক কম হয়। কিন্তু এবার মৌসুম শুরুতে বাঁকড়া সাবস্টেশন এলাকায় ব্যাপক লোডশেডিং শুরু হওয়ায় বিপাকে পড়েছে কৃষক। ঠিকমত পানি সরবরাহ না পাওয়ায় দেরি হচ্ছে ধান রোপণে। এর ফলে মৌসুম শেষে বর্ষায় ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।
এছাড়া বাঁকড়া জনপদ মাছ চাষে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এ জনপদে ব্যাপকভাবে পাবদা মাছ চাষ হচ্ছে। আর এই পাবদা মাছ চাষে ঘেরে এয়াররোটার দিয়ে অক্সিজেন তৈরি করা হয়। যা বিদ্যুৎ দিয়ে চালানো হয়। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে মাছ চাষিরা এয়াররোটার চালাতে পারছে না। তাদের মধ্যেও আতংক দেখা দিয়েছে। কারণ অক্সিজেন ফেল করলে পাবদা মাছ বাঁচানো যাবে না। তাতে লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসানে পড়বে মাছ চাষিরা।
মোটরপাম্প মালিক তাজিমুর রহমান জানান, সোমবার দিবাগত রাতের পুরো সময় বিদ্যুৎ ছিল না। দিনের বেলাও কয়েকবার বড় ধরনের লোডশেডিং হয়েছে। এভাবে চলছে থাকলে বিপদে পড়তে হবে।
কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, এখন শীতের সময়। বিদ্যুতের ব্যবহার অনেক কম। তারপরও বিদ্যুতের লোডশেডিং কেন হবে। এ লোডশেডিংয়ের কারণে আমরা পানি নিতে পারছি না। ফলে আমাদের রোপণ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বাঁকড়া জোনাল সাবস্টেশনের এজিএম রুবেল রানা জানান, সাবস্টেশনের ব্রেকার নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য লোডশেডিং হচ্ছে। আমরা অফিসিয়ালি জানিয়েছি। মেরামত হতে কিছুদিন সময় লাগবে।
তিনি আরও জানান, বিদ্যুতের কোন ঘাটতি নেই। ব্রেকারটি নষ্ট হওয়ার কারণে আমাদের অন্য লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হচ্ছে। ব্রেকারটি ঠিক হলেই বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
মেসেঞ্জার/তুষার