ছবি : মেসেঞ্জার
নোয়াখালী জেলার অন্যতম প্রসিদ্ব সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (বজরা হাসপাতাল)। প্রায় ৫ লাখ জনসংখ্যার সরকারি হাসপাতাল এটি। এলাকার ২২ কিলোমিটারে আর কোন সরকারি হাসপাতাল না থাকায় জনগণের ভরসা এ হাসপাতাল। ৫০ বেডের এ হাসপাতালে অপারেশন তথা ওটি খোলা হয়েছে, ফলে সিজারিনসহ সকল সার্জারির জন্য আর জেলা সদর হাসপাতালে যেতে হবে না। কিন্তু ডাক্তার ও বিষয় ভিত্তিক চিকিৎসক সংকট চরমে। ফলে বেশ হিমসিম হচ্ছে।
দি ডেইলি মেসেঞ্জারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার ইসরাত জাহান বলেন, হাসপাতালটি ৫০ বেডে উন্নতি ২০০৬ সালে, তবুও জনবল সংকট কাটেনি। বর্তমান ১৭ জন ডাক্তারের মধ্যে রয়েছে মাত্র ২ জন ডাক্তার। ১৫ জনের পদ খালি। গাইনি বিভাগে আগে প্রায় প্রতিদিন গর্ভবতীদের সেবা দেয়া যেত। আমরা সব ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করেছি। বদলি হওযার কারণে এখন অনেকে চলে যায় ও পদ শূন্য হয়।
তিনি বলেন, ২ জন ডাক্তার দিয়ে ইনডোর, আউটডোর, ইমারজেন্সি চিকিৎসা দেয়া ও রোস্টার ডিউটি করা প্রায় অসম্ভব। মিডওয়াইফ আছে মাত্র ১ জন, আর নার্স ৮ জন। অথচ ২৫ জন নার্সের পদ শূন্য।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোনাইমুড়ী উপজেলা বেশ বড় জনসংখ্যা অধ্যুষিত এবং প্রচুর রোগী প্রতিদিন সেবা নিতে আসেন। পর্যাপ্ত ডাক্তারসহ জনবল না থাকায় রোগিরা বাইরে ভুল চিকিৎসার শিকার হচেছ, মানসম্মত সেবা প্রদানে আমরা প্রস্তুত। অন্যদিকে, হাসপাতারের সীমানা প্রাচীর না থাকায় নিরাপত্তা ঝুঁকি থেকে যায়। এখানে কোনো নেই নিরাপত্তা প্রহরী।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডাক্তার ইসরাত জাহান দি ডেইলি মেসেঞ্জারকে বলেন, বিগত ৬০ বছর পর আমি এখানে যোগদান করে অপারেশন তথা ওটি খুলেছি এবং প্রয়োজনে নিজেও অপারেশন করছি। সারাদেশে ৩ টি হাসপাতালে ‘ইকো’ করা হয়। তার মধ্যে এটা একটি দাবী করে তিনি বলেন, বেশ ঝাঁকজমক সেবা চলে আসছিল এ হাসপাতালে কিন্তু পদোন্নতি ও বদলীর কারণে অনেকে চলে যায়। যে কারণে সেবা দিতে একটু বেগ পেতে হচেছ।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জরুরি প্রসূতি সেবা নিশ্চিত করতে গাইনি, মিডওয়াইফ, নার্স ও পরিছন্নতা কর্মী পদায়ন দরকার। তিনি বলেন, গত বছর আমাদের হাসপাতালে অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করা হয়, একই সাথে স্বাস্থ্য সেবার সকল বিভাগ চালু করা হয়। সাধারণ মানুষ প্রত্যন্ত এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে গভীর রাতেও ছুটে আসে।
ডা. ইসরাত জাহান আরো জানান, এ্যম্বুলেন্স, আধুনিক ওটি থিয়েটার, রক্ত পরীক্ষা, যক্ষা পরীক্ষা, ইসিজি, আলট্রা পরীক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে কমমূল্য সেবা ও সুবিদা পাওয়ায় ইতিমধ্যে জেলার অন্যতম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হিসাবে সুনাম অর্জন করেছে। সাধারণ মানুষ বলছে, হাসপাতাল যেনো ক্লিনিকের মতো, এত নীবিড় সেবা দেয়া হয় এখানে। তবে দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতালের এক্সরে মেশিন বিকল হয়ে রয়েছে।
ডাক্তার ইসরাত জাহান জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ঢাকা-নোয়াখালী ফোরলেন সড়কের পাশে হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ ভালো। যে কারণে প্রচুর দুর্ঘটনার রোগি আসে। তিনি মাননীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আর্কষণ করেন।
এদিকে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. রিয়াজ উদ্দিন দি ডেইল মেসেঞ্জারকে জানান, সংশ্লিষ্ট মহলে জানানো হয়েছে। হাসপাতালের চতুরপাশ ২২ কিলোমিটার এলাকায় সরকারি হাসপাতাল না থাকায় মানুষের ভীড় যেমন তেমনি উন্নত চিকিৎসা কাম্য।
মেসেঞ্জার/তুষার