ঢাকা,  শনিবার
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

খালি হাতে মৎস্যঘাটে ফিরেন জেলেরা

মো. সাইফুল ইসলাম, চরফ্যাসন (ভোলা)

প্রকাশিত: ১৬:৪২, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫

খালি হাতে মৎস্যঘাটে ফিরেন জেলেরা

ছবি: মেসেঞ্জার

তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে ইলিশ শিকারে যাচ্ছেন জেলেরা। জোয়ার-ভাটার উপর নির্ভর করে দিনে-রাতে দুইবার নদীতে জাল ফেলেন তারা। কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে খালি হাতে মৎস্যঘাটে ফিরে আসেন। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে এমন তথ্য জানিয়েছেন চরফ্যাসন উপজেলার সামরাজ মৎস্যঘাটের আড়তদার হেলাল উদ্দিন টিপু।

সাগরে মাছ ধরা এক ট্রলারের জেলে নুরনবী বলেন, ‘২১ জন মাঝি-মাল্লা নিয়ে ১০ দিন পর সাগর থেকে আইছি। যে পরিমান মাছ পাইছি, তাতে বাজার খরচও তুলতে পারিনাই। সাগরে আগের মতো মাছ নাই।’

একই মৎস্যঘাটে নোঙর করা আরেক ট্রলারের মাঝি রফিক বলেন, ‘২ লাখ ৭০ হাজার টাকার বাজার সদাই নিয়া সাগরে গেছি। ১২ দিন সাগরে কাটানোর পর মহাজনকে এক হাজার টাকাও দিতে পারিনি।’

চরফ্যাসন উপজেলার সর্ববৃহৎ সামরাজ মৎস্যঘাটের মতো এ অঞ্চলের অন্য ঘাটগুলোতে তেমন একটা কর্মযজ্ঞ নেই। বিশেষ করে বেতুয়া, নতুন স্লুইসগেট, পাঁচ কপাট, খেজুরগাছিয়া, ঢালচর, বকসীরঘাট, ঘোষেরহাট, চরকচ্ছপিয়া ও কুকরি মুকরি।

সামরাজ মৎস্যঘাট জেলে সমবায় সমিতি লিঃ এর সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, ‘নদী ও সাগরে মাছ নাই বললেই চলে। তেলের খরচও উঠাতে পারছে না জেলেরা। আড়তদারদের কি দিবে? এ বছরের মত খারাপ অবস্থা গত ৯-১০ বছরেও ঘটেনি। এই ঘাটে ৯৮ জন মৎস্য আড়তদার রয়েছে। এসব আড়তদাররা প্রায় দেড়শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। অথচ দশ শতাংশ চালান তুলতে পারেনি। ভবিষ্যতে কি হবে তা আল্লাহ ভালো জানে।’

চরফ্যাসন উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চরফ্যাসন উপজেলায় প্রায় ৯০ হাজার জেলে রয়েছে। উপজেলার নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৪ হাজার ৩৭৫ জন। অনিবন্ধিত জেলে রয়েছে প্রায় ৪৬ হাজার। এসব জেলেরা নদী ও সাগরে মাছ শিকার করে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ জেলে সামরাজ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বিক্রি করেন।

চরফ্যাসন উপজেলা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ বলেন, 'এখানকার স্থানীয় জেলেরা মূলত: মৌসুমি জেলে। কেউ রিকশা চালায়, কেউবা কৃষিকাজ করেন। মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর মোহনাগুলোতে পলিমাটি জমায় স্রোত কমে গেছে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কমেছে। একারনে জেলেরা মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে ঘাটে ফিরে আসে। এই প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পর্কে অবগত রয়েছে। বিকল্প উপায়ে পানির গভীরতা বৃদ্ধির চেষ্টা করতেছে।'

মেসেঞ্জার/তুষার