ঢাকা,  শনিবার
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

দোয়ারাবাজারে দেড় মাসেও মাটি পড়েনি পাউবো’র ফসল রক্ষা বাঁধে

আশিস রহমান, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)

প্রকাশিত: ২০:১৯, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

দোয়ারাবাজারে দেড় মাসেও মাটি পড়েনি পাউবো’র ফসল রক্ষা বাঁধে

ছবি : মেসেঞ্জার

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ ধীর গতিতে চলছে। এতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে কীনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে কৃষকের মাঝে। ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু কাজ শুরুর নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের কালনার হাওরের ৩ নাম্বার পোল্ডারের ৩৮ নাম্বার পিআইসির শান্তিপুর ক্লোজারে কোনো মাটিই পড়েনি। এছাড়াও খাসিয়ামারা নদীর বাম তীরে ৪০ নাম্বার পিআইসির স্লুইচ গেইটের ক্লোজারেও কাজ শুরু হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে সুরমা ইউনিয়নের ৩৮ নাম্বার পিআইসির শান্তিপুর ক্লোজার। ক্লোজারটিতে এখন পর্যন্ত এক টুকরি মাটিও পড়েনি। ক্লোজারটির ১৭৬ মিটার ডুবন্ত বাঁধের ভাঙা বন্ধকরণ ও পূণরাকৃতিকরণ কাজে বরাদ্দ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০.৫৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে খাসিয়ামারা নদীর বাম তীরে ৪০ নাম্বার পিআইসিতে ৩২০ মিটার ডুবন্ত বাঁধের ভাঙা বন্ধকরণ ও পূণরাকৃতির কাজে বরাদ্দ ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। এই বাঁধের স্লুইচগেইট অংশের ক্লোজারটিতেও মাটি দেখা যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকেরা বলছেন, ‘১৫ ডিসেম্বরে কাজ শুরু করলে এতোদিনে কাজ প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। পাউবো কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও পিআইসি সংশ্লিষ্টদের অবহেলার কারণে এখনো কাজ শুরুই হয়নি।’

৩৮ নাম্বার পিআইসির সভাপতি হুসাইন মোহাম্মদ এমরাজ বলেন, ‘আমার পিআইসিতে কাজ শুরু করতে পারিনি কারণ এই পিআইসি গঠনেই অনিয়ম করা হয়েছে। আমি যেই কমিটি দিয়েছিলাম সেই কমিটিতে আমাকে না জানিয়ে রদবদল করে অন্য মানুষকে ডুকানো হয়েছে। তাই আমিসহ আমার পিআইসির ছয়জন সদস্য ইউএনও'র নিকট লিখিত ভাবে পিআইসি থেকে ইস্তফা দিয়েছি।’

৪০ নাম্বার পিআইসির সভাপতি ইয়াকুব আলী বলেন, ‘এই পিআইসির দক্ষিণ পাশের ভাঙনে মাটি ফেলার কাজ চলছে। এখানে কাজ শেষ করে উত্তর পাশের স্লুইচ গেইটের ক্লোজারে কাজ শুরু করব।’

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, ‘এখনো ক্লোজারের কাজ শুরু হয়নি তাহলে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ হবে কিভাবে? ক্লোজার দিয়ে পানি ডুকে কৃষকদের ফসলহানী ঘটলে তখন এর দায় এড়াতে পারবেনা পাউবো কর্তৃপক্ষ। তাই এ ব্যাপারে পাউবো কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

পানি উন্নয়ন বোর্ড দোয়ারাবাজারের উপ-সহকারি প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘৩৮ নাম্বার পিআইসি নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছিল। তাই নতুন করে আবার পিআইসি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। খুব শিঘ্রই শান্তিপুর ক্লোজারে কাজ শুরু হবে। আর খাসিয়ামারা নদীর বাম তীরে ৪০ নাম্বার পিআইসির তিনটা পয়েন্ট। ইতোমধ্যে এর ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজগুলিও দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।’

৩৮ নাম্বার পিআইসিতে এখনো কাজ শুরু হয়নি কেন জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নেহের নিগার তনু জানান, ‘এখানে তো কাজ শুরু হয়ে যাওয়ার কথা। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।’

মেসেঞ্জার/তুষার