ছবি : মেসেঞ্জার
ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় গ্রিড মেইন্টেনেন্স, সিডিউল শাটডাউন ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণযজ্ঞের অজুহাতে প্রায়ই তীব্র লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের শিল্প কারখানাগুলো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেনারেটর চালু রেখে বায়ারের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্ডারগুলোর কাজ শেষ করতে হচ্ছে। এতে প্রায়ই সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে না পেরে অনেক প্রতিষ্ঠান লে আউট ঘোষণা করছে। ফলে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান। কাজ হারাচ্ছেন শত শত কর্মীরা। এছাড়া ডিজেলের বাড়তি দামের কারণে জেনারেটর চালিয়ে বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদন ব্যয়। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার শিল্প কারখানা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
কারখানা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, গরম আসার সঙ্গে সঙ্গে চরম বিদ্যুৎবিভ্রাটের কবলে পড়তে পারেন তারা। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া নিয়ে তাদের কপালে চিন্তার ভাজ। সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের মালিকরা। এতে তাদের কমপক্ষে ২৫ শতাংশ করে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এই শিল্পকে বাঁচাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ চাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। তারা ভাবছেন, বিকল্প বিদ্যুতের লাইন থাকলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে, তাই বিকল্প বিদ্যুতের সংযোগ তারা চাইছেন।
আশুলিয়ার ডুকাটি অ্যাপারেলস লিমিটেডের একজন কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুৎ না থাকার কারণে জেনারেটর চালিয়ে উৎপাদন কাজ চালিয়ে যেতে হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় যে পাওয়ার ইন্টারাপশন হয় এতে প্রতিবারে কমপক্ষে পাঁচ মিনিট উৎপাদন একেবারে বন্ধ থাকে। এতে সময়মতো শিপমেন্ট যেমন ব্যাহত হয় তেমনি এক পাওয়ার থেকে অন্য পাওয়ারে শিফট হওয়ার কারণে কোম্পানি অন্তত দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছে। ফলে কোম্পানির এচিভমেন্ট বা লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না। আর সপ্তাহে ২০ থেকে ২৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকার কারণে একটি কোম্পানির প্রতি সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার লোকশান গুণতে হচ্ছে।
কাঠগড়া এলাকায় অবস্থিত একটি সোয়েটার ফ্যাক্টরির এমডি হারুন বলেন, এখনো গরম পড়েইনি, শীতকাল চলছে। তবুও প্রতি এক ঘণ্টা পরপর বিদুৎ থাকে না। জেনারেটর অপারেট করে বাড়তি খরচ হয়। এতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। ফলে ক্ষতির মুখে পড়ছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সিডিউল শাটডাউন, মেইনটেনেন্স শাটডাউন ঘোষণা দিয়ে আটঘণ্টা থাকার কথা বললেও কখনো কখনো ১২ ঘণ্টা পরে পাওয়া যাচ্ছে বিদ্যুৎ। তাছাড়া আশুলিয়ার জামগড়া, কাঠগড়া, জিরাবো এলাকায় প্রায়ই সিডিউল শাটডাউন ও মেইনটেনেন্স এর জন্য প্রায় ১২ ঘণ্টা শাটডাউনের অজুহাতে থাকছেনা বিদ্যুৎ। এতে প্রায়ই ভোগান্তির মুখে পড়ছে কারখানার মালিক ও শ্রমিকরা।
তবে ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আকতারুজ্জামান লস্কর বলেন, সরকারি উন্নয়ন কাজ, যেমন ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও গ্রিড মেইনটেনেন্সের জন্য কোথাও কোথাও শাটডাউন দেওয়া হচ্ছে। এ উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের কারণে সাময়িক সৃষ্টি হওয়া এই ভোগান্তি। তবে আশুলিয়ার নবীনগরে একটি নতুন গ্রিড হচ্ছ, এটি বাস্তবায়িত হলে অতি শিগগিরই এই ভোগান্তি লাঘব হবে।
মেসেঞ্জার/নোমান/তুষার