ছবি : মেসেঞ্জার
কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ১৫০ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে। চলতি বছর সঠিক সময়ে বাঁধের কাজ শুরু হওয়ায় অনেকটাই দুশ্চিন্তামুক্ত বোরো চাষিরা। নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যেই বাঁধের কাজ শেষ হবে, এমনটিই আশা করছে কাজের দায়িত্বে থাকা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কিশোরগঞ্জের শতভাগ হাওর অধ্যুষিত ইটনা উপজেলার জিউলের হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধে চলছে শেষ পর্যায়ের মাটি ভরাট।
জেলার হাওর অধ্যুষিত ৯টি উপজেলায় ১২৯ টি প্রকল্প কমিটির মাধ্যমে সকল বাঁধের কাজই এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে।বেশিরভাগ বাঁধের মাটি ভরাটের কাজ রয়েছে শেষ পর্যায়ে। চলতি মৌসুমে ২৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫০ কিলোমিটার বাঁধের কাজ বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
২০১৭ সালে পাহাড়ি ঢল আর টানা বর্ষণে বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার পর, ২০১৮ সাল থেকে হাওরের কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। চলতি বছর সঠিক সময়ে বাঁধের কাজ হচ্ছে তাই স্বস্তিতে হাওরের বোরো চাষিরা।
ইটনা উপজেলার কুনিয়ার হাওরের কৃষক জামাল মিয়া বলেন, বাঁধের কাজ এবার পৌষ মাস থেকে শুরু করেছে। আগাম বন্যা হলেও পানিতে ফসল ডুবাবেনা, আমরা নিশ্চিন্তে আছি। হাওরে এবার আমি ১০ একর জমি করেছি। বাঁধ এবার খুব মজবুত হচ্ছে। এ বাঁধের জন্য সর্বদাই চিন্তায় থাকি।
আল্লাহ চাহেতো এ বছর আর চিন্তা নেই। বাঁধ খুব মজবুত হচ্ছে। নিকলী উপজেলার জোয়ানশাহী হাওরের কৃষক আবুল কালাম বলেন, এবছর বাঁধ ভাল হচ্ছে, আমরা কৃষকেরা মনের শান্তিতে জমিতে কাজ করছি। যেসকল যায়গায় বাঁধ দুর্বল, সেসকল যায়গায় বেশি মজবুত করলে আমাদের আরো ভাল হবে।
মিঠামইন উপজেলার বড় হাওরের কৃষক আবদুল জলিল বলেন, বোরো জমি লাগিয়েছি, ইতিমধ্যে সবুজ হয়ে গেছে। আমাদের চিন্তা হলো বাঁধ নিয়ে। এবার বাঁধ মজবুত হচ্ছে। গুরুত্ব দিয়ে নদীর বাঁকগুলোর বাঁধ মজবুত করে দিলে আমরা আরও নিশ্চিন্ত হবো।
২০২৪ সনের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া এসব বাঁধের কাজের নির্ধারিত মেয়াদ চলতি বছরের (২৮ ফেব্রুয়ারী)। ইতিমধ্যে বাঁধের কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে জানিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, "প্রতি বছরের ন্যায় জেলার হাওর অধ্যুশিত ৯টি উপজেলায় ১২৯টি কাবিটা স্কীমের মাধ্যমে বাঁধের কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
হওরের প্রধান নদীগুলোর বাঁকে যে বাঁধগুলো রয়েছে, সেগুলোতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি আমরা। আগাম বন্যা আসলে নদীর বাঁকগুলোতে পানির প্রেশার বেশি পড়ে। তাই এসব জায়গায় সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। আশাকরি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ বাস্তবায়ন হবে। এবং এ বছর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমাদের কৃষকেরা তাদের স্বপ্নের ফসল ঘরে তোলতে পারবেন।"
চলতি মৌসুমে কিশোরগঞ্জ জেলায় ১ লাখ ৬৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু হাওরেই আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার হেক্টর জমিতে।
মেসেঞ্জার/সাজু/তারেক