ঢাকা,  শুক্রবার
১৪ মার্চ ২০২৫

The Daily Messenger

ফরিদপুরে এলজিইডির রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ফরিদপুরে এলজিইডির রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

ছবি : মেসেঞ্জার

ফরিদপুরের সদর উপজেলার শিবরামপুর বাজার ভায়া ঈশান গোপালপুর ইউপিসি ২৬৫০ মিটার এবং ইঞ্জিনিয়ার মামুন এর অফিস হতে শিবরামপুর বুনিয়াদী স্কুল ভায়া ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ রোডের ১৪৭৮ মিটার রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের ইট ও খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী।

জানা যায়, রাস্তা দুটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অর্থায়নের রাস্তা।

স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) ২০২৪-২৫ ইং অর্থ বছরে প্রকল্পের অনুকুলে ২ টি কার্পেটিং কাজের জন্য যথাক্রমে  ৬৫ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্দ ও  এক কোটি পাঁচ লক্ষ টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। নির্মাণ কাজের দরপত্র আহবান করলে কাজ দুইটি সর্বনিন্ম দরদাতা হিসেবে পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নিলন এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স জি স্টার। পরবর্তীতে সাব ঠিকাদার হিসেবে ঠিকাদার মো. মাহাবুব কাজ করেন মেসার্স নিলন এন্টারপ্রাইজ এর কাজ এবং ঠিকাদার মো. মানোয়ার হোসেন করেন প্রতিষ্ঠান জি স্টার এর কাজটি।

সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, রাস্তার কাজগুলি তদারকি করেন ফরিদপুর সদর উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিদপ্তর সঠিকভাবে তদারকি না করার কারণে ঠিকাদাররা তাদের ইচ্ছামত কাজ করে যাচ্ছে বিধায় কাজের মান হচ্ছে নিম্নমানের।

তারা অভিযোগ করে আরো জানান, এ প্রকল্পের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাস্তার দুই পাশের কাটা মাটির মিশ্রিত বালি দিয়ে বক্স না করেই নিম্নমানের ইট খোয়াসহ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছে রাস্তায়। এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির অনিয়মের অভিযোগের পর কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হলেও এখনও কাজ সমাপ্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দুটি।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর সদর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মফিজুর রহমান বলেন, উন্নয়ন কাজের চুক্তি মোতাবেক কাজ হচ্ছে, কাজে কোন অনিয়ম নেই। কিন্তু তিনি সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হয়নি। তিনি আরো জানান, এ বিষয়ে আমার উদ্ধতন কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশলী বিস্তারিত জানানোর অধিকার রাখেন, আমার বক্তব্য দেওয়ার কোন এখতিয়ার নেই।

ফরিদপুর সদর উপজেলা প্রকৌশলী দেবাশীষ বাগচী বলেন, সড়কে কাজে অনিয়ম হচ্ছে এমন কোনো অভিযোগ এলাকাবাসী আমাকে জানায়নি। তবে যে সকল জায়গায় কাজ হচ্ছে কাজগুলো ভালো হচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় ব্ল্যাক টপ উঠানো হয় নাই তাতে সমস্যা নেই। ওর উপর দিয়ে কাজ করলে রাস্তার কাজ আরো ভালো হবে, তাতে রাস্তায় কোন সমস্যা হবে না।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাব ঠিকাদার মো. মাহবুব ও মো. মানোয়ার হোসেন কোন বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদাররা জানান, ফরিদপুরের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুজ্জামান প্রায় দুই বছর ধরে ফরিদপুরে যোগদান করেছেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই নয়টি উপজেলায় নিন্মমানের ব্রীজ , রাস্তা, কালভার্ট তৈরি হচ্ছে। নিম্নমানের কাজ হবার কারণে ইতিমধ্যেই নগরকান্দা উপজেলায় একটি ব্রীজ, ভাঙ্গা উপজেলায় একটি ব্রীজ, সদরপুরে একটি ব্রীজ কাজ চলমান অবস্থায় ভেঙে পড়ে যায়। এতে সরকারের কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং একাধিক উপজেলার রাস্তা নিম্নমানের হয়েছে। এ বিষয়ে একাধিক পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। তারপরেও নির্বাহী প্রকৌশলী তার ইচ্ছামত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

তারা আরো জানান, ৫ আগস্টের পরে ফরিদপুর থেকে অনেক কর্মকর্তা পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন হয়নি এলজিইডির প্রকৌশলী মো. শহিদুজ্জামানের। এলাকাবাসী দ্রুত তার অন্যত্র বদলীর দাবি জানাচ্ছে।

নিম্নমানের কাজের ব্যাপারে ফরিদপুরের এলজিইডির প্রকৌশলী মো. শহিদুজ্জামান জানান, আমি যোগদানের পরে কোন কাজ নিম্নমানের হয়নি। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই কাজ চলছে।

মেসেঞ্জার/নাজিম/তুষার