ঢাকা,  বুধবার
০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

পরিচ্ছন্ন শহর, সুস্থ জীবন: ঠাকুরগাঁওয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্ত

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:২৩, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

পরিচ্ছন্ন শহর, সুস্থ জীবন: ঠাকুরগাঁওয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্ত

ছবি : মেসেঞ্জার

‘মোর শহর মুই পরিষ্কার রাখিম’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা শহরকে পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। শহরের পরিবেশকে টেকসই ও দূষণমুক্ত রাখতে পৌরসভার পক্ষ থেকে ইএসডিও এর মাধ্যমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর লক্ষ্য হলো শহরের বর্জ্য নিষ্পত্তির জন্য একটি কার্যকর ও সুসংগঠিত ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যা নাগরিকদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর জীবন নিশ্চিত করবে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা জানান, শহরের পরিচ্ছন্নতা রক্ষার দায়িত্ব শুধুমাত্র পৌরসভার নয়, বরং নাগরিকদেরও সমানভাবে ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এই উদ্যোগটি সকল নাগরিকের অংশগ্রহণে সফল হোক। গ্রীণ ঠাকুরগাঁও, ক্লীন ঠাকুরগাঁও গড়ে তুলতে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শহরের পরিবেশগত উন্নয়ন ও নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন নিশ্চিত করতে চাই।’

ঠাকুরগাঁও পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুজ্জামান জানান, শহরের প্রতিটি এলাকায় নিয়মিত বর্জ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার জন্য ইএসডিও'র সহযোগিতায় একটি সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের প্রধান লক্ষ্য শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখা। নাগরিকদের প্রতি আমাদের অনুরোধ, তারা যেন তাদের বসতবাড়ি, দোকান বা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য যেখানে-সেখানে না ফেলে। নির্দিষ্ট ঝুঁড়িতে বর্জ্য সংরক্ষণ করে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কাছে হস্তান্তর করুন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা শহরকে আরও সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর করে তুলতে চাই।’

তিনি আরো জানান, শহরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বর্জ্য সংগ্রহের নির্দিষ্ট স্থান ও ডাস্টবিন স্থাপন করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং আধুনিক যানবাহন ব্যবহার করে দ্রুত বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।

শহরের সাধারণ জনগণ এই উদ্যোগকে অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন। তারা মনে করছেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও শহরের পরিবেশের দৃশ্যমান উন্নতি ঘটবে।

ঠাকুরগাঁও শহরের বাসিন্দা রিনা আক্তার বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি যে, শহরের বিভিন্ন স্থানে বর্জ্য জমে থাকে। এতে পরিবেশ দূষিত হয় এবং দুর্গন্ধ ছড়ায়। পৌরসভার এই উদ্যোগ আমাদের জন্য সত্যিই আশার আলো দেখাচ্ছে। আমরা সবাই মিলে যদি সচেতনভাবে এই নিয়ম মেনে চলি, তাহলে শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে।’

আরেক বাসিন্দা, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বাজার এলাকায় প্রতিদিন প্রচুর বর্জ্য জমে। আগে এগুলো পরিষ্কার করা হতো না, ফলে রাস্তাঘাট নোংরা হয়ে থাকত। এখন নিয়মিত পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এসে বর্জ্য সংগ্রহ করছেন। এতে আমরা অনেক উপকৃত হচ্ছি।’

এই উদ্যোগের ফলে ঠাকুরগাঁও শহরের পরিবেশ ও নাগরিক জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। শহরের রাস্তাঘাট, বাজার, পার্কসহ প্রতিটি স্থান পরিচ্ছন্ন থাকবে। পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় একটি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অবকাঠামো গড়ে তোলার কাজ চলছে।

মেসেঞ্জার/আরিফ/তুষার