ছবি : মেসেঞ্জার
১৭ বছর পর কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জামায়াতের সবচেয়ে বড় কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার। এতে আসছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর জননেতা ডাক্তার শফিকুর রহমান।
এ উপলক্ষ্যে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলা জামায়াত ইসলামীর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আমীরে জামায়াতের আগমনকে কেন্দ্র করে জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯ টায় কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
আয়োজিত কর্মী সম্মেলনকে সফল করার লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যে জেলার প্রত্যেক উপজেলা-ইউনিয়ন-ওয়ার্ড ইউনিট ভিত্তিক প্রস্তুতি কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। আমরা আশা করছি ৮ তারিখের কর্মী সম্মেলনে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে ইনশাআল্লাহ।
এই জনসমাগমকে শান্তিপূর্ণ সুশৃঙ্খল ও নিরাপদের সাথে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আমরা জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ সকল অংশীজনের নিকট সহযোগিতা কামনা করছি। তারই প্রেক্ষিতে জেলা পুলিশের একটি টিম ৪ ফেব্রুয়ারি কর্মী সম্মেলনের স্থান পরিদর্শন করেছেন।
কর্মী সম্মেলনকে যথাযথভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সরকারি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব ৬ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে। এছাড়াও মেডিকেল টিম, এম্বুলেন্স, টেকনিক্যাল টিমসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
এবারের কর্মী সম্মেলনে পুরুষ জনশক্তির পাশাপাশি আমাদের মহিলা জনশক্তিরাও অংশগ্রহণ করবেন। মহিলা জনশক্তির জন্য কক্সবাজার সরকারি কলেজের পাশে অবস্থিত ইলিয়াস মিয়া চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আলাদা বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা আশা করছি আমাদের নিজস্ব পুরুষ এবং মহিলা জনশক্তির পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক সাধারণ জনতা সম্মেলনে উপস্থিত হবেন।
আয়োজিত কর্মী সম্মেলনকে শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও সুশৃংখলভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আবারো জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ট্রাফিক বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগসহ সকল পক্ষের আন্তরিক ও নিরবচ্ছিন্ন সহযোগিতা কামনা করছি। যেহেতু লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ সেহেতু রাস্তাঘাটে চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের ছন্দপতন হতে পারে, বিশেষ করে কক্সবাজারে আগত পর্যটক ভাই বোনেরা সাময়িক অসুবিধার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে পর্যটকসহ অন্যান্য মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা স্বাভাবিক ও সচল রাখতে ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। এরপরেও সাময়িক অসুবিধা সৃষ্টি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এম্বুলেন্স,সংবাদপত্র, ফায়ার সার্ভিস, ঔষধ সরবরাহসহ রাষ্ট্রীয় কাজে নিয়োজিত সকল যানবাহনকে স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করার জন্য আমরা সংগঠনের সকল পর্যায়ের দায়িত্বশীল ও নেতাকর্মীদের প্রতি আপনাদের মাধ্যমেও অনুরোধ করছি।
আপনারা জানেন বিগত সাড়ে পনেরো বছর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসনামলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতন নিষ্পেষণ ও জেল জুলুমের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শাসনামলে দেশে মানবাধিকার, ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার ছিল নির্বাসিত।
আওয়ামী লীগ জুলুমতন্ত্র কায়েম করে দেশের মানুষকে এক প্রকার জিম্মি করে রেখেছিল। ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে আমি ও ডামি মার্কা নির্বাচন করে জন মানুষের সাংবিধানিক অধিকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছিল।
গুম, খুন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও টাকা পাচার করে দেশকে একটি বিভীষিকাময় ও বিশৃঙ্খল পরিবেশে ঠেলে দিয়েছিল। সর্বত্র বৈষম্য, বিভেদ ও জাতীয় ঐক্য বিনাশী কর্মকান্ড ছেয়ে গিয়েছিল। জনগণ দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, বিচার ব্যবস্থা নিয়ে আশাহত হয়েছিল। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এহেন প্রেক্ষিতে দেশের ছাত্রসমাজ কোটা সংস্কার আন্দোলনে তাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিরোধী মত ও পথ সহ্য না করার মানসিকতা লালনকারী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ ছাত্র আন্দোলনকে শুরু থেকেই দমনে চেষ্টা করে।
আমাদের দেশের সাহসী ও অকুতোভয় তারুণ্য শক্তি আওয়ামী লীগের সকল রক্ত চক্ষু ও ভয়ভীতি উপেক্ষা করে তাদের দাবি আদায়ে অটল থাকে। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের সকল বাহিনীকে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তরুণ ছাত্র-জনতার ওপর লেলিয়ে দিয়ে আন্দোলন দমনের অপচেষ্টা করে।
ছাত্রদের এই আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির সহ সকল রাজনৈতিক দল-মত ও আপামর জনসাধারণ সর্বাত্মক সমর্থন ও সহযোগিতা করে। অবশেষে ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সহ সকল মন্ত্রী, এমপি এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় আবার অনেকেই আত্ন গোপনে চলে যায়।
মেসেঞ্জার/তুষার