ছবি : মেসেঞ্জার
অর্থের বিনিময়ে বিএনপি ও প্রশাসনের কেউ কেউ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছে বলে অভিযোগ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম বিষয়ক সমন্বয়ক আবু হানিফ।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণহত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কিশোরগঞ্জে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান শেষে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন তিনি।
শহরের পুরানথানা মোড় থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করে।
আবু হানিফ বলেন, যারা আওয়ামী লীগের ভোট পাওয়ার জন্য এবং তাদের অবৈধ টাকার ভাগ পাওয়ার জন্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছেন তাদের পরিণতি ভয়াবহ হবে। গণহত্যাকারীদের বিচার না করতে পারলে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, সেই বাংলাদেশে এখনো আমরা দেখছি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, যারা আমাদের ভাইদের ওপর গুলি চালিয়েছিল, যারা আমাদের ছাত্র-জনতার ওপর নির্মমভাবে হামলা করেছিল, তারা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, আপনাদের ৬ মাস হয়ে গেছে, আপনাদের ‘হানিমুন পিরিয়ড’ শেষ হয়েছে। কিন্তু আপনারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের হামলায় জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেন নাই। আমরা স্পষ্ট বলছি, গণহত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগের গত ১৬ বছরের শাসন ব্যবস্থা কিভাবে ৩৬ দিনে ভেঙে পড়েছে। আপনারা যদি নিজেদেরকে নব্য ফ্যাসিবাদের জায়গায় অবতীর্ণ করতে চান, তাহলে শেখ হাসিনার পতনের কথা আপনাদেরকে স্মরণ করতে হবে।
বাংলাদেশের গত তিনটি অবৈধ নির্বাচনকে ভারত সমর্থন দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছর দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা ভারতের গোলামি করেছে। শেখ হাসিনা ভারতে বসে দিল্লীর সহযোগিতায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
আবু হানিফ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টা সরকারি সহযোগিতায় কিংস পার্টি গঠনের চেষ্টা করছেন, এটা স্পষ্টতই জুলাই আন্দোলনের সাথে বেঈমানি।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি এবং বালু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের এক ধরণে যোগসাজসে হয়েছে। আমরা স্পষ্ট বলছি শেখ হাসিনার অপকর্মের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছি, কোনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করার জন্য নয়। সুতরাং যারা নব্য দখলদার এবং বালু ব্যবসার জন্য অবৈধ অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন আপনাদেরকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি, ভবিষ্যতে যদি এগুলো করতে থাকেন আমরা রাজপথে থেকে এর প্রতিবাদ করবো।
গণঅধিকার পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব আকন্দ মোহাম্মদ উজ্জ্বল, যুগ্ম আহ্বায়ক অভি চৌধুরী, কটিয়াদী উপজেলা শাখার নেতা মহসিন, যুব অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন তালুকদার, জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি সোহাগ মিয়া, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা পায়েল চৌধুরী প্রমুখ।
মেসেঞ্জার/তুষার