
ছবি : মেসেঞ্জার
চলতি মৌসুমে আলুর ন্যায্যমূল্য আদায়ের দাবিতে ও অযৌক্তিকভাবে হিমাগারে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে জয়পুরহাটের কালাইয়ে প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্র ও কৃষকরা।
অথচ আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা জয়পুরহাট। আর জয়পুরহাটের মধ্যে সবচেয়ে আলু উৎপাদন বেশি হয় কালাই উপজেলায়। এছাড়া জেলার ১৯টি হিমাগারের মধ্যে ১১টি হিমাগার এ উপজেলায় অবস্থিত।
সমাবেশ শেষে কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহানের কাছে তারা স্মারকলিপি প্রদান করেন।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে কালাই উপজেলার বাসস্ট্যান্ড চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে পৌরসভার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা চত্বরে ইউএনও কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি রাতুল আহেম্মদ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার জয়পুরহাটে ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে ৪৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। আর এরমধ্যে ৯ হাজার হেক্টরে আগাম জাতের আলু রোপণ করা হয়েছে। উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ৯ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টন। গত বছরের তুলনায় এবার ৪ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বেশি আলু রোপণ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৯ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ মে.টন আলু আশা করা হচ্ছে।
কৃষকরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার আলু চাষে অনেক বেশি খরচ পড়েছে। এ বছর আলুর ফলন বেড়েছে কিন্তু বিক্রি করে প্রচুর লোকশান গুনতে হচ্ছে। অনেকে কিস্তির ওপর ঋণ নিয়ে আবার কেউ ধারদেনা করে আলু উৎপাদন করলেও লাভের পরিবর্তে ব্যাপকভাবে লোকসানের মুখে পড়ছেন। এমনিতে কৃষকদের অবস্থা খারাপ, তার উপরে হঠাৎ করে আলুর দাম কমে যাওয়ায় মরার উপরে খাড়ার মতো ঘা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এরমধ্যে প্রতিকেজি আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগারগুলো হঠাৎ করেই আট টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে। ভাড়া বেড়ে যাওয়াই কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই তারা দ্রুত আগের ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান। এ পরিস্থিতিতে তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেতে দ্রুত প্রশাসনের সহায়তা এবং সিন্ডিকেট মুক্ত দাবি জানান এবং তিন দিনের মধ্যে এই দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনে নামার হুশিয়ারি দেন তারা।
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, কৃষকদের বাঁচাতে হলে এই সিন্ডিকেট ভাঙতেই হবে। তাদের সমস্যা সমাধান না হলে কৃষি ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান বলেন, উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি নজরদারি করছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন, বিভাগীয় কমিশনার ও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মেসেঞ্জার/রমি/তুষার