
ছবি : মেসেঞ্জার
ঘটনার সময় দেশে অবস্থান না করেও নাশকতার মামলায় আসামি হয়ে জেল কাটছেন এক প্রবাসী। অভিযুক্ত প্রবাসী হলেন জেলার কেন্দুয়া উপজেলার রামজীবনপুর গ্রামের মো. আক্কাছ মিয়া (৬২)। তিনি ওই গ্রামের মৃত মাহমুদ হোসেনের ছেলে।
ভুক্তভোগীর স্বজনদের দাবি ও প্রবাসে থাকা কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আক্কাছ মিয়া ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে দুবাই গিয়ে ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসেন। মামলায় তাকে দলপা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি উল্লেখ করে পুলিশ। তবে আওয়ামী লীগের কোনো নেতা বা কর্মী নয় বলে নিশ্চিত করেন দলপা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজিম উদ্দিন ফকির।
পুলিশ জানায়, গত ২১ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার বাদে আঠারোবাড়ি গ্রামের মো. দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. জামাল উদ্দিনের করা মামলায় অজ্ঞাত আসামী হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পরদিন পুলিশ আদালতে হাজির করলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৩০ মে জেলার কেন্দুয়া উপজেলা সদরের হাইস্কুল সড়কের মো. জামাল উদ্দিনের বাসা ও উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ভাংচুর করা হয়। এ সময় দলীয় কার্যালয় ও বাদীর বাসায় হামলা ও ভাংচুর চালানোর অভিযোগ করা হয়। কেন্দুয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক ভূইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম জুয়েল, তাজুল ইসলাম, আব্দুল কাদিরসহ ৬০ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাত আরো ৪০-৫০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় আক্কাছ মিয়াকে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দেখানো হয়। গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।
আক্কাছ মিয়ার মেয়ে সোমা আক্তার, জামাতা শামীম আহেমেদ ও ছেলে লিংকন মিয়া বলেন, আমাদের বাবা ২০১১ সালের ডিসেম্বরে মাসে দুবাই যান। পরে পাসর্পোটের মেয়াদ শেষ হলে সেখানে থেকেই পাসর্পোট রিনিউ করেন। প্রবাস থেকে তিনি ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বরে দেশে আসেন। মসজিদের জায়গা নিয়ে বিরোধ থাকায় এলাকার একটি পক্ষ তাকে আওয়ামী লীগ বানিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা সেনাবাহিনীর দ্বারস্থ হই। এই ক্ষোভে আমাদের বাবাকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করে জেল খাটানো হচ্ছে। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।
জানতে চাইলে কেন্দুয়া উপজেলার দলপা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজিম উদ্দিন ফকির বলেন, আক্কাছ মিয়া ১০ বছর ধরে বিদেশ থাকেন। তিনি আওয়ামী লীগ বা কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নয়। বছর দেড়েক আগে তিনি দেশে এসেছেন। তাকেও ২০১৬ সালের নাশকতার অভিযোগে মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে শুনে অবাক হয়েছি।
সংশ্লিষ্ঠ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিম উদ্দিন তালুকদার বলেন, আক্কাছ মিয়া কোনো দিন রাজনীতি করেন নাই। তিনি বিদেশে থাকতেন। যে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই মামলার ঘটনার তারিখ ২০১৬ সালের। তখন তিনি দুবাই ছিলেন। বিদেশ থেকে কিভাবে ভাংচুর করল আমরা জানি না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেন্দুযা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, আক্কাছ মিয়া প্রবাসে ছিলেন এমন তথ্য আমাদের জানা নেই। বিষয়টি যাচাই করে পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেসেঞ্জার/জিয়াউর/তুষার