
ছবি: মেসেঞ্জার
জামালপুরে আমার বাংলাদেশ-এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, ভারত ও বিজেপির রাজনীতি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর বাস্তবতা বাংলাদেশকে বিপদে ফেলার মত অবস্থায় নেই।
ভারত বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থানকে স্বাগত জানাই। ভারতের সাথে সংলাপ হওয়া উচিত। গত ৭৭ বছরের যে ভারতীয় নীতি, যা আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারকে তোষণ করার নীতি তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। আপনারা বাংলাদেশের সাথে, বাংলাদেশীদের সম্পর্ক গড়েন। ভারতের সাথে আমাদের স্থায়ী শত্রুতার কোন জায়গা নেই।
আলোচনার টেবিলে সমাধান করা যাবে না এমন কোন সমস্যা নেই। গঙ্গাতে পর্যাপ্ত পানি আছে যা দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের দুই দিকের নদীকে বাঁচানো যাবে, উভয় দেশের কৃষকের পানির চাহিদা মিটবে। কিন্তু দরকার হচ্ছে আন্তরিকতার সাথে ব্যবস্থাপনা করা। তবে ভারতকে আওয়ামী লীগের ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
আওয়ামী লীগ এখন মৃত। তাই মৃত মাকে নিয়ে এখন মাতম না করা। বাস্তবতায় ফিরে আসতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের সাথে ভারতের সম্পর্ক গড়তে হবে। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহরের ফৌজদারী মোড়ে জামালপুর জেলা এবি পার্টি আয়োজিত সমাবেশ পূর্ব এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নির্বাচন করে যদি ২৫০ এর বেশী আসন নেয় তাহলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর হবে। বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা খুবই বেশী, কিন্তু বিএনপির সমালোচনা করা, তাকে গঠনমূলক জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এমন পরিকল্পনা আছে আওয়ামীলীগের বিরোধী সবাই মিলে একসাথে নির্বাচন করা। কিন্তু তখন বিরোধী দল কে থাকবে? সরকারের সমালোচনা কে করবে? এটা দেশের জন্য ভালো হবে না। তাই আমরা বোধ করছি বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, তবে বিএনপির বাইরে বড় রাজনৈতিক কাঠামো থাকা দরকার। যারা দেশের মানুষের জন্য, দেশের জন্য সরকারের সমালোচনা করবে।
এই গণতন্ত্র না থাকলে বাংলাদেশে সংসদ কার্যকর থাকবে না, রাষ্ট্র থাকবে না। তাহলে এখানে আবার একটা বাকশাল কায়েম হবে, সবাই মিলে লুটপাটের রাজতন্ত্র কায়েম হবে।
তিনি আরও বলেন, যে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীকে গনঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পালাতে বাধ্য করা হয়েছিল, সে আর ফিরবে না।
অনলাইনে উস্কানি দিয়ে দুনিয়ার কোন শক্তির অপচেষ্টাকে সফল হতে দেবে না গণতন্ত্রকামী জনগণ। আওয়ামী লীগের দোসর ও পুনর্বাসনকারীদের প্রতিহত করবে জামালপুরবাসী, যেটা আবারো প্রমাণ করে দিয়েছে দেশের তরুণ-যুবকরা। গত ছয় মাসে সারাদেশে রাজনৈতিক ব্যানারে হাট-ঘাট-মাঠ দখলের যে প্রতিযোগীত দেখেছি, জনগণ সেটা চলতে দিবে না। যদি কেউ মনে করে যে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনীতিতে তরুণদের স্বপ্নকে ব্যর্থ করে দেবে, তা সফল হবে না।
আগামী দিনে যারা ক্ষমতায় ফিরবার স্বপ্ন দেখছেন, তাদের পতিত সরকারের কর্মকান্ড থেকে শিক্ষা নেয়া জরুরী। পুরাতন বংশীয় লুটপাট তরুনরা আর মেনে নেবে না, তাই চরিত্র বদলান, তা না হলে আপনাদের কপালও ৩২ নম্বরের মত পুড়বে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, এটা সম্মতির ভিত্তিতে হওয়া দরকার। সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যমত দরকার। আমরা মনে করি আওয়ামী লীগ আমাদের তিনটি নির্বাচন থেকে বঞ্চিত করেছে, তাদেরকেও আগামী তিনটি নির্বাচন থেকে বঞ্চিত করা উচিত। এ সময় দলীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকেলে শহরের ফৌজদারী মোড়ে জামালপুর এবি পার্টির আয়োজনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে এবি পার্টির জাতীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য,কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা এবি পার্টির আহবায়ক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
এছাড়াও এবি যুব পার্টির সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন, এবি পার্টির সহকারী প্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ, জামালপুর জেলার যুগ্ম আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার লিপসন মিয়া, জামালপুর পৌর এবি পার্টির আহবায়ক নজরুল ইসলাম, সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান বুলবুল, যুগ্ম আহবায়ক মো. আতিকুর রহমান বাবু, যুগ্ম আহবায়ক উসমান গণি, জামালপুর এবি যুব পার্টির আহবায়ক শিহাব ইসলাম, সদস্য সচিব আবু সালেহ টিপু সুলতান, সাংগঠনিক সম্পাদক যোবায়ের হোসেনসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
মেসেঞ্জার/হালিম/তুষার