![জেলফেরত বিএনপি নেতাকে দেখতে যাওয়া ৩জনকে পিটিয়ে জখম জেলফেরত বিএনপি নেতাকে দেখতে যাওয়া ৩জনকে পিটিয়ে জখম](https://www.dailymessenger.net/media/imgAll/2024February/49-2502121513.jpg)
ছবি : মেসেঞ্জার
বসতঘর থেকে ডেকে নিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গাছের সাথে বেধে রাখা হয়। ডাকাত হিসাবে জোরপূর্বক নেওয়া হয় শিকারোক্তি। এসময় পরিবারের লোকজন বার বার বাঁচাতে এলে তাদেরকেও লাঞ্চিত করা হয়। পরে ডাকাত তকমা দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর আগে পুরো ঘটনা ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়। জেল ফেরত এক বিএনপি নেতাকে দেখতে যাওয়ার অপরাধে এই বর্বরোচিত ঘটনার শিকার হন নোয়াখালী হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের তিন জেলে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে জাহাজমারা ইউনিয়নের কাদিরিয়া স্লুইসগেট এলাকার সরকারি ব্যারাক হাউজে এই ঘটনাটি ঘটে।
আহত তিন জেলে হলো একই এলাকার আলী আজ্জমের ছেলে ফখরুউদ্দিন (২৮), মো: দিলুর ছেলে শাহারাজ (২৭) ও কামাল উদ্দিনের ছেলে মো. কাউসার (২৭)।
এলাকাবাসী জানান, আহত তিনজন পেশায় জেলে। ঘটনার দিন জাহাজমারা ইউনিয়ন বিএনপির ৬নং ওয়ার্ড সভাপতি হাসান মাঝি দীর্ঘদিন পর জেল থেকে বের হলে তাকে দেখতে তার বাড়ীতে যায় শাহারাজ, ফখরুউদ্দিন ও কাউসার। হাসান মাঝির সাথে দেখা করার অপরাধে ওই দিন রাত দশটায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষের হামলা ও বেধড়ক পিটুনীর শিকার হন তিন জন। পরে তাদেরকে পিটিয়ে রশি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়। ভূয়া রকেট লাঞ্চার সামনে দিয়ে ডাকাত সাজিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ে ভিডিও ধারণ করে। যাহা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এখানে শেষ নয়, থানা মোবাইল করে ডাকাত ধরা হয়েছে বলে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
থানার প্রধান ফটকে দেখা হয় জেলে কাউসারের মা জাহেরা খাতুনের সাথে। সাংবাদিকদের দেখে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে জাহেরা জানান, তার সন্তান সহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত কিংবা মৌখিক কোন অভিযোগ কখনো আসেনি। তারা সব সময় নদীতে থাকেন। রাতে তাদেরকে ঘর থেকে ডেকে এনে বেধড়ক পিটানো হয়। এসময় বার বার অনেকের পায়ে ধরেও নিজের ছেলেকে বাঁচাতে পারেন নি বলে জানান জাহেরা।
এ বিষয়ে জাহাজমারা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল খায়ের জানান, থানায় সোপর্দ করা তিন জন সরাসরি ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার ঘটনা তিনি জানেন না। তবে বিগত সরকারের আমলে তারা বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত থাকতে পারেন।
বিএনপি নেতা হাসান মাঝি জানান, এখানে সরকারি ব্যারাকের অনেক মানুষ আমাকে দেখতে এসেছে। এরি মাধ্যে ব্যারাকে বসবাস করা তিন জনকে বেধড়ক পিটিয়ে পুলিশে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দায়ী করেন।
এবিষয়ে হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আজমল হুদা বলেন, ডাকাত হিসেবে থানায় সোপর্দ করা ৩ জনের বিষয়ে আমরা ক্ষতিয়ে দেখেছি। তাদের সাথে যেগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো একপ্রকার সমুদ্রে ব্যবহৃত প্যারাস্যুট সিগনাল বাতি। এগুলো কোন রকেট লাঞ্চার না। এ বিষয়ে হাতিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। থানায় সোপর্দ করা তিনজনকে তাদের স্বজনদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য জাহাজমারা ফাঁড়ি থানার ইনচার্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মেসেঞ্জার/জিল্লুর/তুষার