
ছবি : মেসেঞ্জার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর উদ্যোগে কারাবন্দী সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি এবং জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নগরীতে মিছিলটি নগরীর হেতেম খাঁ জাদুঘর মোড় থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক গুলো প্রদক্ষিণ করে সাহেব বাজার গণকপাড়া মোড়ে গিয়ে এক সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরী আমীর ড. মাওলানা কেরামত আলীর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের নায়েব আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মজিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী অঞ্চল টিম সদস্য রেজাউর রহমান ও রাজশাহী জেলা আমীর অধ্যাপক আব্দুল খালেক।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার দেশের মানুষের উপর নির্মমভাবে গণহত্যা চালিয়েছে। কোনো অপরাধ ছাড়ায়ে বছরের পর বছর জেলে বন্দী করে রেখেছে। আমাদের মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম তাদের একজন। বর্তমান সরকারকে বলবো তাকে দ্রুত মুক্তি দিন।
তিনি আরো বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার তাদের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নির্বিচারে নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। জুডিশিয়াল কিলিং এর মাধ্যমে আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ জামায়াতের ১১ জন শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দিয়ে ও কারারুদ্ধ অবস্থায় হত্যা করেছে। ক্যাঙ্গারু ট্রায়ালের মাধ্যমে এটিএম আজহারুল ইসলামসহ অন্যান্য জামায়াত নেতৃবৃন্দকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। ৩৬ শে জুলাই দেশ ফ্যাসিবাদের হাত থেকে স্বাধীন হলেও এটিএম আজহারুল ইসলাম এখনো মুক্তি পায়নি। আমরা অবিলম্বে এই সরকারের কাছে তার মুক্তির দাবী জানাচ্ছি। একইসাথে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও নির্বাচনী প্রতিক দাঁড়িপাল্লা ফিরিয়ে দেওয়ার আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় জনগণ রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের দাবী আদায় করবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা কখনো কল্পনাও করেনি গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদের পতন হবে। শেখ হাসিনা যেই আইন দিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে সেই আইনের মাধ্যমেই এবার তার গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার করা হবে।
ড. মাওলানা কেরামত আলী বলেন, বিশ্ব মানবতার রক্ষা কবচ হচ্ছে ইসলাম। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাসুলুল্লাহ সাঃ এর আদর্শকে ধারণ করে এদেশে মানুষ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের পতনের ৬ মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে অথচ এখনো জামায়াতকে নিয়েষড়যন্ত্র চলছে। জামায়াতে ইসলামীকে যারা ষড়যন্ত্র করছেন তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, বিগত ১৬ বছরে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা জীবন দিয়েছে, শহীদ হয়ে তবুও ফ্যাসিবাদের কাছে, কোন অন্যায়ের কাছে মাথানত করেনি। আমরা আমাদের অধিকার চাই, আমাদের নেতৃবৃন্দের মুক্তি চাই, আমাদের নিবন্ধন ও নির্বাচনী প্রতিক ফিরে পেতে চাই। এদেশকে একটি কল্যাণরাষ্ট্রে পরিনত করতে, আধিপত্যবাদী অপশক্তির ষড়যন্ত্র রুখতে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগরীর নায়েব আমীর অধ্যক্ষ সিদ্দিক হোসাইন ও এ্যাড. আবু মোহাম্মদ সেলিম, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাহবুবুল আহসান বুলবুল, জেলা সেক্রেটারি গোলাম মুর্তজা, মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসাইন ও আব্দুস সামাদ, জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক নাজমুল হক, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, নুরুজ্জামান লিটন, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক এমকেএম সরোয়ার জাহান প্রিন্স, জসিম উদ্দিন সরকার, তৌহিদুর রহমান সুইট, হাফেজ নুরুজ্জামান, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজশাহী মহানগরী সভাপতি মুহাম্মদ শামীম উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
মেসেঞ্জার/তুষার