ঢাকা,  শনিবার
০১ মার্চ ২০২৫

The Daily Messenger

নোয়াখালী রেসিডেন্সি স্কুল এন্ড কলেজ একাডেমির কার্যক্রম চলছে টিনশেডে

আল মামুন চৌধুরী, নোয়াখালী

প্রকাশিত: ১৮:০২, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নোয়াখালী রেসিডেন্সি স্কুল এন্ড কলেজ একাডেমির কার্যক্রম চলছে টিনশেডে

ছবি : মেসেঞ্জার

জেলা শহর থেকে দূরে নোয়াখালী মৌজার ৫ কি. মি. এ একটি মাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলো ছড়াচ্ছে। অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির জরাজীর্ণ টিনশেডে ৭৫০ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। নেই খেলার মাঠ, দরকার জরুরি ভিত্তিতে পাকা একাডেমিক ভবন। ভবন নির্মিত হলে শিক্ষা দানের পাশাপাশি আপদকালীন সময়ে বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড়ের সময় সাইক্লোন শেল্টার হিসাবে ব্যবহার করা যাবে বলে কলেজ কতৃপক্ষ জানান।

সরেজমিন পরিদর্শনে উল্লিখিত চিত্র ফুটে উঠে। যোগাযোগ ব্যবস্থা কাঁদা মাটি রাস্তা হওয়ায় টেলিভিশন ক্যামরা সেখানে পৌঁছেনি, পৌছেনি রাজনৈতিক বড় নেতা বা কোনো রাজনৈতিক দল।

এই প্রতিবেদক অবহেলিত এই জনপদে পড়ুয়া মাধ্যমিক ও কলেজ পযার্য়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থী সাথে কথা বলেন। তারা জানান, যদিও লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছি, কিন্তু টিনশেডে আমাদের ভীষণ কষ্ট হয়, মাটি ভরাট করলে খেলার মাঠও হত। তাদের দাবী একাডেমি ভবনটি পাকা করার নতুবা আসছে বর্ষায় পাঠদান কঠিন হয়ে পড়বে। তার উপর তাপপ্রবাহ। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬১% মেয়ে শিক্ষার্থীর অভিযোগ রয়েছে বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় দুষ্কৃতকারীরা বিদ্যালয়ের টিনশেড দরজা জানালা ভেঙে মাদকসেবন করে।

রেসিডেন্সি স্কুল এন্ড কলেজ একাডেমির অধ্যক্ষ শাহ মিজানুল হক দি ডেইলি মেসেঞ্জারকে জানান, ২০০৬ সালে ১ একর ৪৫ শতাংশ জায়গায় নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও পরে অবহেলিত জনগোষ্ঠীর কথা ভেবে কলেজ শাখা খোলা হয়। ২৭ জন শিক্ষক পাঠদান করছে যদিও নিম্ন মাধ্যমিক ৮ম শ্রেণির শিক্ষকসহ ১২ জন এমপিওভুক্ত।

তিনি বলেন, ২০২২ সালে জেলা শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একাডেমি ভবন ও সাইক্লোন শেল্টারের আবেদন করা হয়। কিন্তু সেই আবেদন লালফিতায় রয়ে গেছে।

শাহ মিজানুল হক এর ভাষায়, চরে কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করে না। কারণ হতদরিদ্র মানুষ সামান্য ৫০ টাকা বেতনও দিতে পারে না। তিনি বলেন, নোয়াখালী শিক্ষা প্রকৌশলী বিভাগ কিছু সহায়তা দিয়েছে কিন্তু তা অপ্রতুল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী শিক্ষা প্রকৌশলী বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার নাজমুল ইসলাম দি ডেইলি মেসেঞ্জারকে জানান, নোয়াখালী রেসিডেন্সি স্কুল এন্ড কলেজের একাডেমিক ভবনের জন্য উপজেলা কমিটি সুপারিশ করেছে। জেলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্তের পর আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের সাইড ওয়ালসহ বেশ কিছু বরাদ্দ এর আগে দেয়া হয়েছে। মাঠ ভরাট করা হবে।

শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আগ্রহ অনেক। তারা ১৫ কি.মি. অদূরে জেলা শহরে নানা প্রতিযোগিতায় বিজয়ের কথা তুলে ধরে বলেন, এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব খেলার মাঠ থাকলে খেলাধুলার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মেধা বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি হয়।

এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ অবহেলিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাঝে আলো ছড়িয়ে দিতে পারছে এটা যেমন আনন্দের। আবার তারা নিজেদের সন্তান সংসার নিয়ে চিন্তিত। কারণ কম বেতনে এ সময়ে চলা বেশ কঠিন। এ যেন এক অবহেলিত জনপদ যার কথা কেউ বলে না, রাস্তাগুলো জরাজীর্ণ, এঁকেবেঁকে, সামান্য কালভার্টের ব্যবস্থাও নেই।

মেসেঞ্জার/তুষার

আরো পড়ুন