
ছবি : মেসেঞ্জার
ট্রেড লাইসেন্স বিক্রির প্রায় ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান-সচিবের বিরুদ্ধে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ৫নং গয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ডিমলা উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি শরীফ ইবনে ফসয়াল মুন ও সাবেক ইউপি সচিব সুভাষ চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ২০২৪ সালের জুলাই থেকে চলিত বছরের ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত ১ হাজারের অধিক ট্রেড লাইসেন্স বিক্রি করেন চেয়ারম্যান শরীফ ইবনে ফয়সাল মুন ও সচিব সুভাষ চন্দ্র রায়। এছাড়াও চক্রে জড়িত রয়েছে চেয়ারম্যানের পকেটখ্যাত মশিয়ার রহমান নামের সাবেক এক ইউপি সদস্য। প্রতিটি ট্রেড লাইসেন্স ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা দরে বিক্রি করতেন তারা। সাথে যোগ করতেন ১৫ শতাংশ ভ্যাট। যার বিক্রিত আয় গড়ে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা কিন্তু তথ্য অধিকার আইনে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে ৮৩টি ট্রেড লাইসেন্স বিক্রি করেছেন মাত্র ১৯ হাজার ৭শত ৫৪ টাকা।
এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ফরেয়াদের। ব্যবসায়ীদের কাধে চাপিয়ে দেওয়া ট্রেড লাইসেন্স। শুধু ইউনিয়নটির শুটিবাড়ী বাজারেই রয়েছে পাইকারী এবং খুচরা মিলে ১ হাজারের বেশি দোকান। তাছাড়া মতির বাজার, রহমানগঞ্জ ও ফুটানির হাট মিলে ১৫শ- ১৬শ দোকান।
শুটিবাড়ী বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী বেলাল আহম্মেদ জানান, আগে লাইসেন্স প্রতি ১৫০-২০০ টাকা করে নিতেন । তবে এ বছর ব্যতিক্রমী ভাবে নিয়েছেন আমার দোকানের যে লাইসেন্স নিয়েছি তার মূল্য ১০০০ টাকা ধরেছে সাথে ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ ১ হাজার ১ শত ৫০ টাকা নিয়েছে। ছোট একটা দোকানে এতো টাকা নিলে কেমন হয়? নিচ্ছেই বা কিভাবে? বাধ্য হয়ে দিতে হচ্ছে তাদের দেওয়া মূল্যেই।
মাহবুব নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমার লাইসেন্স এর ভ্যাট সহ ১১৫০ টাকা আসলেও নিয়েছে ৫৫০ টাকা। তবে অনেকের আছে আরও বেশি টাকা নিয়েছে।
আব্দুল লতিফ নামের অন্য আরেক ব্যবসায়ী বলেন, মশিয়ার মেম্বার কম্পিউটার থেকে বাহির করে দিয়ে ১ হাজার টাকা চেয়ে ছিল। চেয়ারম্যানকে বলার পর ৬৫০ টাকা নিয়েছে। ছোট একটা মুদি খানা আমার কাছেও এতো টাকা নিলো বলার বাহিরে। সে মানুষের কাছে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নয়, জন্ম নিবন্ধনের জন্য অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেন। ধনী গরিব কিছুই বুঝে না সে।
গয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মাসুদ বলেন, যখন থেকে দায়িত্ব পেয়েছি তখন থেকে সকল হিসেবে সংরক্ষণের রয়েছে। আগে হিসেব চেয়ারম্যান সাহেব আর আগের সচিব দিতে পারবেন। আমাদের কাছে যতটুকু তথ্য আছে আপনাকে দিয়ে দিয়েছি।
গয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আতিকুর ইবনে রহিম বলেন, আমাকে ট্রেড লাইসেন্সের কোনো হিসেব বুঝে দেয়নি আগের সচিব। আমি যতগুলো বিক্রি করেছি সকল হিসেব ঠিক আছে। তা তথ্য অধিকারের চাওয়া মাত্রই দিয়ে দিয়েছি।
এবিষয়ে গয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সচিব সুভাষ চন্দ্র রায় বলেন, সেখানে ২০২৪ সালে ফেব্রæয়ারী থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ছিলাম। মশিয়ার মেম্বার কম্পিউটার থেকে বাহির করত আর চেয়ারম্যান স¦াক্ষর দিয়ে দিতো। সেখানে ইমান আলী চকিদার, চেয়ারম্যান আর মশিয়ার তারাই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতো। আমি পরবর্তীতে আমি বই কিনে এনে সেগুলো ব্যবহার করেছি সেগুলো মিলন ব্যবহার করতেছে।
শরিফ ইবনে ফয়সাল মুন এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে সচিবের সাথে কথা বলেন তিনি ভালো জানেন। আমি তো বেশকিছু দিন বাহিরে ছিলাম বলতে পারছি না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেল মিয়া জানান, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মেসেঞ্জার/তুষার